ইডি গ্রেফতার করল নিয়োগ দুর্নীতির ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়কে, এসএসসি মামলায় পাকড়াও

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আবার গ্রেফতার হলেন প্রসন্ন রায়। তবে এবার ইডি’‌র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রসন্ন। সোমবার তাঁকে দিন–রাত ইডি দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পর তথ্যের অসংলগ্নতা থাকায় গ্রেফতার করা হয় প্রসন্ন রায়কে। আগেও একবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘মিডলম্যান’ হিসেবে কাজ করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে জামিন দেয়। তবে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (‌ইডি)‌। আর প্রসন্ন রায়কে জেরা করার জন্য ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। জেরায় তাঁর জবাব সঠিক না হওয়ায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। প্রসন্ন রায়কে বেশি রাতে গ্রেফতার করে ইডি।

এদিকে ইডি সূত্রে খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। সেখান থেকে বেশকিছু নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। যা দেখে অনেক বিষয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে। তারপর সেই নথির ভিত্তিতে তাঁকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। কিন্তু সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রসন্ন রায়। কিন্তু সোমবার আবার নতুন করে প্রসন্নকে জিজ্ঞাবাদের জন্য তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কিন্তু সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে সন্তোষজনক উত্তর না দেওয়ায় তাঁকে হেফাজতে নেয় ইডি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রসন্ন রায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে দাবি ইডি–সিবিআইয়ের।

অন্যদিকে ইডি অফিসাররা তদন্ত করে জানতে পারেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এসপি সিনহা, জীবনকৃষ্ণ সাহা–সহ শিক্ষা দফতরের একাধিক কর্তাব্যক্তির ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন প্রসন্ন রায়। আগে সিবিআইয়ের চার্জশিটে বলা হয়েছিল, যারা অর্থের বিনিময়ে চাকরি পেয়েছে, তারা এই প্রসন্ন রায়ের হাতেই টাকা দিয়েছে। সেই টাকা এই দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন প্রসন্ন রায়। বিনিময়ে মোটা টাকা প্রাপ্তি যোগ হয় প্রসন্ন রায়। তবে এবার ঠিক কোন তথ্যের ভিত্তিতে প্রসন্নকে গ্রেফতার করল ইডি সেটা জানা যায়নি। আগে গ্রুপ ডি এবং নবম–দশমের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।

আরও পড়ুন:‌ বাগডোগরা–ঘোষপুকুর জাতীয় সড়ক বন্ধ রয়েছে, বিকল্প পথেই যাতায়াত করতে হবে

এছাড়া ইডি সূত্রে খবর, নামে–বেনামে প্রসন্ন রায়ের কমপক্ষে ৮০টির উপর সংস্থা রয়েছে। এমনকা তাঁর স্ত্রী এবং নিজের নামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি। সুপ্রিম কোর্ট নভেম্বর মাসে প্রসন্ন রায়কে জামিন দেয়। কিন্তু সিবিআই হেফাজত থেকে মুক্তি পেলেও মাত্র তিন মাসের মধ্য়ে আবার ইডির হাতে গ্রেফতার হলেন মিডলম্যান প্রসন্ন। আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও নীলাদ্রি ঘোষকে। তাঁর ছেলেও জামিনে মুক্ত আছেন। কিন্তু প্রসন্ন রায় মুক্ত থাকতে পারলেন না। আদালতের দ্বারস্থ হবেন তিনি বলে সূত্রের খবর।