‘‌নিঃশব্দে কেমন করে এই কাজ হল?’‌ ‘পাড়ায় সমাধান’ থেকে শিক্ষক বদলি নিয়ে কড়া বিচারপতি

‘পাড়ায় সমাধান’ একটি সরকারি প্রকল্প। যেখানে গেলে স্থানীয় মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িত সমস্যার সমাধান করা হয়। এবার এই প্রকল্পের শিবির থেকে শিক্ষক বদলি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। আর তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে অস্বস্তিতে পড়ল রাজ্য সরকার। কারণ সোমবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন ২১৬ জন শিক্ষকের বদলি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানতে চান, এই ঘটনায় রাজ্য ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’ করতে কি পারবে? আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে রাজ্য সরকার জবাব দেবে। তবে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মন্তব্য, রাজ্য তদন্তে উদাসীন হলে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তভার দিতে হবে। ওই বদলিতে আদালত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

এদিকে যে অভিযোগ উঠেছে তার সত্যতা কতটা আছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মধ্যে। কিন্তু পাড়ায় সমাধান প্রকল্প থেকে যদি শিক্ষক বদলির ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তা নিঃসন্দেহে চাপের বিষয়। এখন এই ‘নিরপেক্ষ’ তদন্ত হলে গোটা বিষয়টি সামনে চলে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগেও একাধিক দুর্নীতিতে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, এক শিক্ষিকা আবেদন করে বদলি পাননি। তখন ওই শিক্ষিকা ‘পাড়ায় সমাধান’ শিবিরে গিয়ে বিষয়টি জানালে নাকি বদলি পেয়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। এটা জানাজানি হতেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদিকে পাড়ায় সমাধান কর্মসূচিতে শিক্ষক বদলি নিয়ে আবার দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার শুনানি পর্বে পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর প্রশ্ন, ‘রাজ্য কি নিরপেক্ষ তদন্ত করবে? যদি তদন্তে উদাসীনতা থাকে তবে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে।’ ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখের মধ্যে রাজ্যকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিচারপতি বসু।

আরও পড়ুন:‌ অফিসটাইমে ব্যাহত মেট্রো পরিষেবা, পাতালপথে যান্ত্রিক গোলযোগ, দাঁড়িয়ে পড়ল ট্রেন

এদিনের শুনানিতে বিচারপতি আরও জানান, পর্ষদের হলফনামা থেকে স্পষ্ট যে পাড়ায় সমাধান থেকে আসা বদলির সুপারিশ কার্যকর করা হয়েছে। সবটাই হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নির্দেশে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর প্রশ্ন, তাহলে সত্যিই কি কমিশনের নির্দেশে বদলি কার্যকর করা হয়েছে? উঠছে প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে নেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। সেই আবেদন মঞ্জুর করে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজ্যকে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই বিষয়ে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মন্তব্য, ‘‌পাড়ায় সমাধান থেকে সুপারিশ করা আবেদন গ্রহণ করে বদলি করেছে। কে এই নির্দেশ দিলেন? ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী কী করলেন? তাঁর তো একটা ভূমিকা থাকবে। নিঃশব্দে কেমন করে এই কাজ হল?’‌