একদিন আগেই বাংলা সফরে প্রধানমন্ত্রী, মুখ ঢেকে কি আসবেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা?‌

সন্দেশখালি নিয়ে এখন তপ্ত রাজ্য–রাজনীতি। এই আবহেই বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বারাসতে সভা রয়েছে। আগামী ৬ মার্চ রাজ্যে আসার কথা প্রধানমন্ত্রী। এখন সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ তাঁর সভা মঞ্চে হাজির করা হতে পারে গ্রামের মহিলাদের। ধর্ষণ করার অভিযোগে উঠেছে সন্দেশখালিতে। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চলত, বলে অভিযোগ। রাজ্যপাল থেকে শুরু করে মহিলা কমিশন বা এসসি–এসটি কমিশনের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন মহিলারা। এবার তাঁদের মুখোমুখি হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে বিজেপি সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭ মার্চ জরুরি কাজ থাকায় তার আগের দিন অর্থাৎ ৬ মার্চ রাজ্যে আসছেন। সন্দেশখালি ইস্যুকে হাতিয়ার করে বারাসাতে মহিলা ন্যায় সমাবেশের আয়োজন করছে বঙ্গ বিজেপি। আর ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন মোদী। আর সন্দেশখালির নির্যাতিতারা মুখ ঢেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হবেন। ৬ মার্চ বারাসতে ‘মহিলা সম্মেলন’ করবেন প্রধানমন্ত্রী। মূল মঞ্চের পাশে পৃথক একটি মঞ্চ গড়া হবে। সেখানেই মুখ ঢেকে বসবেন নির্যাতিতারা। বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যদি তাঁরা দেখা করতে চান, তাহলে আমরা দেখা করাব। তাঁদের ইচ্ছের উপর নির্ভর করছে।’ এবার প্রধানমন্ত্রীকে বাংলায় নিয়ে এসে লোকসভা নির্বাচনে মহিলাদের মন পেতে এখন মরিয়া পদ্মশিবির বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফর বাতিল হয়েছে। তাই রাজনৈতিক অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফরকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছেন বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। তাই এখন রাজ্য বিজেপির লক্ষ্য মোদীর ‘মহিলা সম্মেলন’ সফল করা। নয়াদিল্লিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি ছিল বিজেপির জাতীয় সম্মেলন। সেখানে ‘বিকশিত ভারত’ প্রস্তাব এনেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাতে সরকারের নানা সাফল্যের কথার সঙ্গেই জায়গা পেয়েছিল সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গলাতেও শোনা গিয়েছে সন্দেশখালির কথা। স্মৃতি ইরানি আগেই এই নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন।

আরও পড়ুন:‌ মাঝরাতে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘেরাওমুক্ত হলেন উপাচার্য, হস্তক্ষেপ করল পুলিশ

এছাড়া মহিলাদের সমর্থন না পেলে যে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করা কার্যত অসম্ভব সেটা মাথায় রেখেই এবার মহিলা ন্যায় সমাবেশের মাধ্যমে খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বারাসতের মাটিতে হাজির করা মহিলাদের পাশে থাকা বঙ্গ বিজেপির কৌশল। সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘‌মহিলারা তৃণমূল নেতাদের হাতে শোষিত হচ্ছে, অত্যাচারিত হচ্ছে। তৃণমূল হাত থেকে তাঁদের মুক্তি দিতেই প্রধানমন্ত্রী আসছেন রাজ্যে।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে যাঁদের নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন, ওদের নিয়ে আগে কেন উদ্যোগ নেননি?’‌ কিন্তু খালিস্তান ইস্যুর কী হবে?‌ উঠছে প্রশ্ন।