Abhishek on Sahjahan: তৃণমূল নয়, শেখ শাহজাহানকে আড়াল করছে বিচারব্যবস্থা, বিস্ফোরক দাবি অভিষেকের

তৃণমূল নয়, শেখ শাহজাহানকে আড়াল করছে দেশের বিচারব্যবস্থা। এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে এই দাবি করে অভিষেক বলেন, বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে সন্দেশখালি যাতে দিনের পর দিন জ্বলে তার ব্যবস্থা করেছে বিচারব্যবস্থা।

এদিন অভিষেক বলেন, ‘ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার অভিযোগ করে EDর দায়ের করা অভিযোগের তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত SIT তৈরির নির্দেশ দেন। সেই SITতে থাকবেন রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইয়ের এক জন করে প্রতিনিধি। তার ১০ -১২ দিন পরে ED কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন করে ওই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চায়। ইডির আবেদনের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ সেই স্থগিতাদেশ মঞ্জুর করে। স্থগিতাদেশ মানে তদন্ত হবে না। স্থগিতাদেশ মানে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। স্থগিতাদেশ মানে কাউকে নোটিশ পাঠিয়ে ডাকা যাবে না। এটা কে করেছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এটা করেছে হাইকোর্টের বিচারপতি। সেই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৬ মার্চ। হাইকোর্ট, বিচারব্যবস্থা যদি রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের হাত পা বেঁধে দেয়, FIR স্থগিত করে দেয়, তাহলে পুলিশ গ্রেফতার করবে কী ভাবে? একটা FIRএর পর প্রশাসনকে ন্যূনতম ১৫ দিন থেকে ২ মাস সময় তো দিতে হবে। ইডিকে তো ১২ বছর সময় দিচ্ছে কিছু তো হচ্ছে না। তখন তো আপনি হাত পা বাঁধেন না’।

অভিষেকের প্রশ্ন, ‘সারদার মামলায় ১০ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখনও তদন্ত শুরু হয়নি। পুলিশকে আপনারা ১৫ দিন সময় দেবেন না, আর ED-কে আপনারা ১০ বছর, ১২ বছর, ১৫ বছর সময় দিতে প্রস্তুত। এই বৈষম্য কেন’?

বিচারব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তুলে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও ED-র করা আলাদা আদালা ২টি FIR-এর ২টিতেই স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। একটা সম্ভবত বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আরেকটা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিয়েছে। যারা নিজেদের বিচারব্যবস্থার প্রতিনিধি হিসাবে দাবি করেন তাঁদের প্রশ্ন করুন, আপনারা কেন স্থগিতাদেশ চাইলেন? যাতে বিজেপি ১৫ দিন ধরে ফুটেজ খেতে পারে’?

অভিষেক দাবি করেন, ‘যারা বলছে শেখ শাহজাহানকে তৃণমূল কংগ্রেস গার্ড করছে। আরে তৃণমূল কংগ্রেস এমন দল যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেয়াদ করেনি। কে শেখ শাহজাহান? যারা নারদার ফুটেজ দেখিয়ে বলেছিল, শুভেন্দু অধিকারী চোর। তারা শুভেন্দু অধিকারীকে দলে নিয়ে বড় বড় পদ দিয়েছে। যারা দিল্লির অফিস থেকে বলেছিল হেমন্ত বিশ্বশর্মা চোর, তারা হেমন্ত বিশ্বশর্মাকে বড় বড় পদ দিয়েছে। এটাই মোদীজির গ্যারান্টি। মানে যত চোর, জোচ্চোর, দুই নম্বর, ধাপ্পাবাজ, চিটিংবাজ যা করার করো। তার পর গেরুয়া ফ্ল্যাগ হাতে ধরে নেও। সাত খুন মাফ।

এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরে মানুষের আস্থা অটুট রয়েছে বলে দাবি করে অভিষেক বলেন, ‘শেখ শাহজাহানকে কে গ্রেফতার করতে রাজ্য পুলিশের হাত পা হাইকোর্ট বেঁধে না দিয়ে পুলিশকে যদি দায়িত্ব দিত, পুলিশ করে দেখাত। আর সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছে কেন শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করো? কারণ যার কাছে মানুষ বিচার পাবে বলে আশা করে তাকেই লোকে বলে। সবাই জানে, যদি বিচার হয় আমাদের সরকারই করবে’।

এর পরই বিস্ফোরক অভিযোগ করে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই নিয়ে কোনও দ্বিমত সংশয় রাখবেন না যে শেখ শাহজাহানকে তৃণমূল কংগ্রেস আড়াল করছে। শেখ শাহজাহানকে যদি কেউ আড়াল করে, সেটা হল বিচারব্যবস্থা। আমি এটা অন রেকর্ড বলছি। যাতে রোজ সন্দেশখালি শিরোনামে থাকে। যাতে রোজ সন্দেশখালি জ্বলে। বিচারব্যবস্থা স্থগিতাদেশ তুলে দিক তার পর পুলিশ যদি না ধরতে পারে একই প্রশ্ন আমাকে করবেন’।