এমন পরিস্থিতি বহু ক্ষেত্রেই শোনা যায় যে, বিয়ের কথা পাকা হওয়ার পরও কোনও এক পক্ষ তা থেকে পিছিয়ে এসেছে। আবার বিয়ের সব কিছু ঠিকঠাক হওয়ার পরও, অনেক সময় বিবাহ বাসর থেকে বিয়ে না হওয়ার ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতি নিয়ে একটি বড় রায় উঠে এল সুপ্রিম কোর্টের তরফে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় উঠে এসেছে।
এক মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট একটি বড় বার্তা দিয়েছে বিয়ে থেকে সরে আসার ঘটনা ঘিরে। কোর্ট বলছে, কোনও বিবাহ বাসরে বা ম্যারেজ হল-এ পৌঁছেও যদি কোনও এক পক্ষ বিয়ের থেকে মত বদলে ফেলে, বা সরে আসে, তাহলে তা আইপিসি ৪১৭ ধারার আওতায় প্রতারণার মামলা নয়। কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলছে, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, বর্তমান আবেদনকারীর বিরুদ্ধে আইপিসি ৪১৭ এর আওতাধীন কোনও মামলার অভিযোগ দাঁড়াচ্ছে না।’ কোর্ট বলছে, ‘বিয়ের উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক কারণ হতে পারে, পরে সেই বিয়ের প্রস্তাব সঠিক লক্ষ্যে না পৌঁছলে তারও বহু কারণ থাকতে পারে। প্রসিকিউশনের সামনে এমন কোন প্রমাণ নেই এবং তাই আইপিসি ৪১৭ এর অধীনে কোন অপরাধও করা হয়নি।’
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২১ সালের এক মামলায় সহবাসের পর বিয়ে নিয়ে একটি বড় রায় দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট। ২০২১ সালের সেই রায়ে কোর্ট বলেছিল, প্রতিশ্রুতি ভাঙা আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া এক জিনিস নয়। ফলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের পর বিয়ে করতে যদি কেউ অসম্মত হন বা অস্বীকার করেন, তাহলে তা প্রতারণা হতে পারেনা। এর আগে ওই মামলায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের পর বিয়ে না করার অভিযোগে এক যুবক দোষী সাব্যস্ত হন। সেই মামলার শুনানিতেই আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল সহবাসের পর বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা মানে প্রতারণা নয়। সেই মামলা ছিল মহারাষ্ট্রের পলঘরের। সেই মামলায় কাঠগড়ায় ছিলেন জনৈক কাশীনাথ ঘরাতে। তাঁর বিরুদ্ধে সঙ্গীনিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করার অভিযোগ ছিল। কাশীনাথের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। তবে সেই মামলায় ধর্ষণের অভিযোগ থেকে কাশীনাথ নিষ্কৃতি পেলেও, প্রতারণার দায়ে তাঁর জেলের সাজা হয় নিম্ন আদালতে। সেই আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে বম্বে হাইকোর্টে মামলা করেন কাশীনাথ। সেখানেই বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে সহবাস নিয়ে বড় রায় দেয় কোর্ট।