ডুয়ার্সে খুলল একটা চা-বাগান, বন্ধ হল আরেকটি

প্রায় চার মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে খুলে গেল বাগডোগরার ত্রিহানা চা বাগান। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে চা বাগানটি বন্ধ ছিল। অবশেষে শ্রম দফতরের তৎপরতায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে চা বাগানটি খুলে গিয়েছে। তবে চা বাগান খুললেও এখনও পর্যন্ত বকেয়া না মেটানোই উদ্বেগ কাটছে না শ্রমিকদের। তবে মালিকপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে আগামী মার্চের মধ্যে বকেয়া মেটানো হবে। এই অবস্থায় বকেয়া না মেটালে শ্রমিকরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অন্যদিকে, শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গেল আলিপুরদুয়ার জেলার আরও একটি চা বাগান।

আরও পড়ুন: ফের বন্ধ ডুয়ার্সের চা বাগান, রাতের অন্ধকারে তালা দিয়ে চলে গেলেন ম্যানেজাররা

মালিকপক্ষ বকেয়া টাকা না মেটানোর কারণে তীব্র শ্রমিক অসন্তোষের মুখে পড়ে ত্রিহানা চা বাগান বন্ধ করে দিয়েছিল। শ্রমিকেরা বারবার সরব হয়েও সমাধান সূত্র মিলছিল না। শেষে তৃণমূল কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের তৎপরতায় সমাধান সূত্র মেলে। জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস বাবদ বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা। মালিক পক্ষ আশ্বাস দিয়েছে আগামী মার্চের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করা হবে। এমন প্রতিশ্রুতি মেলায় সোমবার বাগান খোলা হয়েছে। তবে সোমবার সাতসকালে কর্মীরা হাজির হলেও কাজে যোগদান করেননি। মঙ্গলবার থেকে বাগানের বিভিন্ন এলাকায় কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকরা।তাদের বক্তব্য , গত কয়েক বছর ধরে চা বাগানে এরকম অবস্থা চলছে। লক আউটের জেরে বেতন বকেয়া হয়ে গিয়েছে। এরপর একমাস চালানোর পর আবার চা বাগান বন্ধ হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে আবার তাদের বেতন বকেয়া হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শ্রমিকরা। তাছাড়া বাগান বন্ধ থাকাকালীন শ্রমিকরা একজোট হয়ে বাগান পরিচর্যার কাজ করেছেন। সেই টাকাও বকেয়া রয়েছে বলে দাবি করেন শ্রমিকেরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি আগামি ২৪ মার্চের মধ্যে বকেয়া টাকা না পেলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।

অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি চা-বলয়ের বিচ চা বাগান সোমবার থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে এই চা বাগানের ২৫০০ জন শ্রমিক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। অভিযোগ, চা বাগানের ম্যানেজার কমলেশ ঝা চন্দন গাছ চুরির অভিযোগে বাগানের এক শ্রমিককে বেধড়ক মারধর করেন। তার পরেই শ্রমিকরা ম্যানেজারের উপর হামলা চালায় বলে পালটা অভিযোগ। তাছাড়া তার কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও তার দামি মোবাইলও কেড়ে নেয় শ্রমিকরা। এই ঘটনার জেরে তীব্র সংকট দেখা দেয়। খবর পেয়ে হাসিমারা ফাঁড়ির পুলিশ কমলেশকে উদ্ধার করে। সোমবার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলছে। এর ফলে ওই চা বাগানের ২৫০০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে, ম্যানেজারকে মারধরের ঘটনায় একাধিক শ্রমিকের বিরুদ্ধে তিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে আলিপুরদুয়ার জেলায় চা বাগান বন্ধের সংখ্যা দাঁড়াল ৮টি।