‘‌বাংলা ভিখারি নয়, কাউকে ভিক্ষা করতে হবে না’‌, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে তোপ মমতার

বাংলাকে যে কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চনা করেছে সেটা বারবার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও মন্ত্রীরা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন। দিল্লিতে গিয়ে দরবার করেছেন অভিষেক। রেড রোডে দু’‌দফায় ধরনা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কেন্দ্র টাকা দিতে পারলে রাজ্যে চালু নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা তাঁর সরকারই মেটাবে বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়ার প্রশাসনিক সভা থেকে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘বাংলা হকের টাকা চায়। বাংলা ভিখারি নয়। কাউকে ভিক্ষা করতে হবে না।’

ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আবাস যোজনা বকেয়া রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেটাও না পারলে দেবে রাজ্য সরকার বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্য আদায়ের জন্য অনেক আন্দোলন, চিঠি লেখা, অনুরোধ করা হয়ে গিয়েছে। সেটা এবার থেকে আর করা হবে না। তাই আজ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি ঘোষণা করলেন, ‘‌বাংলা আর কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না। বাংলা নিজের পায়ে স্বনির্ভর হবে।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আদিবাসী আর মাহাতোদের মধ্যে ঝগড়া লাগাবেন না’‌, পুরুলিয়া থেকে বার্তা মমতার

এখন কেন্দ্র দিচ্ছে আর যাতে বলা না যায় সেই পদক্ষেপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজ্যই দিচ্ছে এটা সামনে নিয়ে আসছেন। এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অনেকের অ্যাকাউন্টেই টাকা পৌঁছে গিয়েছে। বাকিদেরও পৌঁছে যাবে। কেন্দ্রের হিসাবে ছিল ২১ লক্ষ ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকের নাম। কিন্তু এখন আমরা দেখছি সংখ্যাটা ৫০ লক্ষ। এই ৫০ লক্ষ শ্রমিককে আমরাই টাকা দেব। এবার মোদীকে জবাব দিতে হবে, কেন তিনি ১০০ দিনের কাজের টাকা দেননি! আবাস যোজনার টাকাও আমরা দেব। ১ এপ্রিল পর্যন্ত দেখব। তার মধ্যে কেন্দ্র টাকা না ছাড়লে যে ১১ লক্ষ বাড়ি নথিভুক্ত রয়েছে। যাঁরা সার্টিফিকেট পেয়েও বাড়ি পাননি, তাঁদের বাড়ি বানানোর টাকা রাজ্য সরকার দেবে। সব আমি দিয়ে দেব। কাউকে ভিক্ষা করতে হবে না। বাংলা ভিখারি নয়। বাংলা হকের টাকা চায়। অধিকারের টাকা চায়।’

এছাড়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকা বাড়ানো হয়েছে। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রাজ্য সরকার করবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে এবার যুক্ত হল আবাস যোজনা। সুতরাং লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন্দ্র নয় রাজ্যই দিচ্ছে—এই বার্তা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তার ফলে বিজেপি বাংলায় বেশ চাপে পড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের দাবির কথা স্মরণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘সারি এবং সারনা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছি। যদি তারা না করে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব এই স্বীকৃতির জন্য।’