ঘন জঙ্গলের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে নয়া রাজধানী! মহাকাশ থেকে অবিশ্বাস্য ছবি দেখাল NASA

ঘন জঙ্গলের মাঝেই গড়ে উঠছে আস্ত একটি জনবহুল শহর। ছবি শেয়ার করে বিস্ময়কর দৃশ্য দেখিয়েছে আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসা। জঙ্গলটি পূর্ব বোর্নিওতে অবস্থিত এবং যে শহরটি গড়ে উঠছে সেটি হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাজধানী নুসানতারা। স্যাটেলাইট ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে যে কীভাবে ২০২২ সাল থেকে শহরের উন্নয়নে অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বনাঞ্চল পরিবর্তিত হয়েছে। NASA জানিয়েছে যে প্রায় দুই বছরে বনাঞ্চলের দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে, নতুন রাজধানী শহর তৈরির জন্য পূর্ব কালিমান্তানের বালিকপাপন উপসাগরের কাছে রাস্তা এবং বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান রাজধানী জাকার্তা সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার কারণে বোর্নিও দ্বীপে এই নতুন শহরটি গড়ে তোলা হচ্ছে।

নাসা আর্থ অবজারভেটরি অনুসারে জাকার্তায় বর্তমানে ৩০ মিলিয়নেরও বেশি লোক বাস করেন, যাঁরা ঘন-ঘন বন্যা, বায়ু দূষণ, পানীয় জলের অভাবের ভোগেন। ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার সময় জাকার্তার জনসংখ্যা ছিল এক মিলিয়ন। জাকার্তা কত দ্রুত ডুবে যাচ্ছে তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। রাজধানীর অত্যধিক জনসংখ্যা, সেইসাথে এলাকায় নগর উন্নয়নের বাড়তি চাপ শহরের মাটি মানিয়ে নিতে পারে না। এর ফলে এটি আরও নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অফ ফায়ারে অবস্থিত বলে এই অঞ্চলটি ভূমিকম্পপ্রবণ। এগুলি পরবর্তীকালে মাটির সংকোচনের কারণ হতে পারে, যা সমস্যাটিকে আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতি বছর অত্যধিক ভূগর্ভস্থ জল বেরিয়ে আসার কারণে ১৫ সেন্টিমিটার অবধি হ্রাস হয়েছে এবং শহরের ৪০ শতাংশ এখন সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচে চলে গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, , ইন্দোনেশিয়ার এই নতুন শহরের জন্য মাস্টার প্ল্যানটি ২০১৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময় যে নীলনকশা (blueprint) অনুমোদিত হয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে বিল্ডিং এবং পরিবহন হাবগুলির সঙ্গে সংযুক্ত উঁচু ওয়াকওয়ে, যার দরুণ বাসিন্দারা নুসানতারা পাহাড়ি অঞ্চলকে বাইপাস করতে পারেন। এই নির্মাণ কাজ ২০৪৫ সালের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মাকাসার স্ট্রেইট থেকে ৩০ কিলোমিটার ভিতরে জঙ্গলে ঘেরা তেল পাম বাগানের একটি এলাকায় ২০২২ সালে নির্মাণ শুরু হয়েছিল। নুসানতারা শব্দটি পুরানো জাভানিজ থেকে এসেছে এবং এর অর্থ ‘বাইরের দ্বীপ’ বা ‘দ্বীপপুঞ্জ’। প্রাথমিকভাবে, এই শহরটি ৫০০,০০০ লোক থাকতে পারবেন আপাতত অনুমান করা হচ্ছে এবং সেই অনুযায়ী অবকাঠামোও তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে যে এটি একটি সবুজে ঘেরা মহানগর হবে, শহরের ৭৫ শতাংশই বনভূমি ঘিরে থাকবে।