National Science Day 2024: আজ জাতীয় বিজ্ঞান দিবস পালিত হয়, ভারতের ইতিহাসে এই দিনটি সোনার মতো উজ্জ্বল

বিজ্ঞান মানুষের জীবনকে অকল্পনীয় নানা মাধ্যমে সহজ করে দিয়েছে। স্মার্টফোন, বিমান, কম্পিউটার, রোবট, বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের সাহায্যে সবকিছু অর্জন করা সক্ষম। ইদানিংকালে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাও সেই বিজ্ঞানেরই দান। বৈজ্ঞানিক সাফল্য শুধু যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ তা নয়, কোনও দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও। ভারতও জন্ম দিয়েছে অনেক পদার্থবিদ ও বিজ্ঞানী। এমনই এক মহান বিজ্ঞানী হলেন চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন। তিনি বর্ণালীবিদ্যায় অত্যন্ত বিরল আবিষ্কার করেছিলেন। যা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছিল ‘রমন এফেক্ট’ বা ‘রমন স্ক্যাটারিং’। এই আবিষ্কারকে উৎসাহিত করার জন্য প্রতিবছর ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিজ্ঞান দিবস পালন করে ভারত।

১৯২৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। সি ভি রমন ঘোষণা করলেন, তাঁর নতুন আবিষ্কারের কথা। তবে সেই আবিষ্কারের কথা বলতে গেলে এগিয়ে যেতে হবে আরও কয়েক বছর। ১৯২১ সালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরছিলেন ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী। সেই সময় সমুদ্রের নীল জল দেখে তাঁর মনে প্রশ্ন জাগে, কেন জলটা নীল। আকাশের বর্ণ নীল, বিশেষ বর্ণচ্ছটার কারণে। সমুদ্রের রঙের পিছনেও কি তেমনই কিছু রয়েছে? সেই শুরু ভাবনা। দীর্ঘ সাত বছর শেষে আবিষ্কৃত হল রমন এফেক্ট। কী এই সূত্র? এই সূত্র বলে, যখনই আলো একটি স্বচ্ছ মাধ্যমে ভ্রমণ করে, তখন পুনঃনির্দেশিত আলোর অংশ তার বর্ণালী ও তীব্রতার পরিবর্তন ঘটায়।

তামিলভাষী ড. সিভি.রমন ১৯০৭-১৯৩৩ সাল পর্যন্ত কাজ করেছিলেন কলকাতা ভিত্তিক ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্সে। এই মহান কৃতিত্বের জন্য তাঁকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ড. সিভি রমন প্রথম ভারতীয় যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, যা ভারতকে গর্বিত করেছিল। ১৯৮৬ সালে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কমিউনিকেশন ভারত সরকারকে সুপারিশ করেছিল ২৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য। ভারত সরকারের সম্মতিতে ১৯৮৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার পালিত হয় জাতীয় বিজ্ঞান দিবস।

জাতীয় বিজ্ঞান দিবস

(HT_PRINT)

জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের তাৎপর্য

জাতীয় বিজ্ঞান দিবস পালনের উদ্দেশ্যই হল, বিজ্ঞানের গুরুত্বের কথা সবার সামনে তুলে ধরা। পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনের বিজ্ঞানের ব্যবহারের দিকটি প্রচার করা। এর মাধ্যমে বহু মানুষকে বিজ্ঞানে আগ্রহী হতে বার্তা দেওয়া সম্ভব হয়। প্রতি বছরই জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের নির্দিষ্ট থিম থাকে। এবারের থিম ‘বিকশিত ভারতের জন্য স্বদেশীয় প্রযুক্তি’। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের নিরলস পরিশ্রম ও তাঁদের অর্জনের দিকটিকেই রাখা হবে ফোকাসে।

জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের থিম

প্রতি বছরই বিজ্ঞান দিবসের জন্য আলাদা থিম ঘোষণা করে কেন্দ্র। দেশের আমজনতা যেন বিজ্ঞানের গুরুত্ব বোঝেন এবং দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের আশীর্বাদগুলো কাজে লাগান, সেই কথা মাথায় রেখেই পালিত হয় জাতীয় বিজ্ঞান দিবস। চলতি বছরে এই বিশেষ দিনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বিকশিত ভারতের দেশীয় প্রযুক্তি (Indigenous Technologies for Viksit Bharat)। দেশের সামগ্রিক উন্নতি করতে সকলেই যেন বৈজ্ঞানিক কার্যকলাপে অংশ নেন, সেই বার্তা দিয়েছে কেন্দ্র।

জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের মূল উদ্দেশ্য

ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞানে অনুপ্রাণিত করার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যুবকদের উৎসাহিত করা। রমন এফেক্ট আবিষ্কার উদযাপন এবং বিশ্বের কাছে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের কৃতিত্ব প্রচার করা হয় এদিন। এছাড়া এদিন জনসাধারণের মধ্যে বৈজ্ঞানিক সচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা হয়। মানবজাতির অগ্রগতির জন্য বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ এবং আবিষ্কারের গুরুত্ব তুলে ধরাও হল এই দিনটি পালনের মূল উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে একটি।