‘‌গরিবদের বাড়ি তৈরি করে না দিলে কী করি দেখে নেবেন’‌, ঝাড়গ্রাম থেকে হুঁশিয়ারি মমতার

আজ, বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহল সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নানা ভূমিকায় দেখা গেল। কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেন তিনি। সেখানে দেখা যায় রণংদেহী মেজাজ। রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার সঙ্গে পা মিলিয়ে আদিবাসী নাচ করেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার সভার ফাঁকে বাজালেন মাদল। এই তিন ভূমিকায় দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এখান থেকেই বিজেপি নেতাদের তুলোধনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌নির্বাচন এলে দিল্লির বাবুরা আসে। দিল্লির বাবুরা বাংলাকে ভালবাসে না। বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার করেন।’‌

এদিকে আজও আমজনতার মাঝে মিশে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা দেখা গিয়েছে বারবার। আজ, বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে অন্য মেজাজে দেখা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে সঙ্গে নিয়ে পা মেলালেন নাচের ছন্দে। আবার অনুষ্ঠান থেকে বিজেপিকে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি গ্যাসের দাম থেকে শুরু করে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিভিন্ন বিষয় নিয়েও মোদী সরকারকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তিনি নাগরিকত্বের বিষয় নিয়েও বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঝাড়গ্রামের জন্য অনেক কাজ হয়েছে। আর্চারিতে খুব ভাল করেছে। আমার বিশ্বাস একদিন তারা অলিম্পিক জয় করবে। আদিবাসী উন্নয়ন দফতর নতুন করে তৈরি করেছি। ঝাড়গ্রাম, কালিম্পংয়ে আরও দু’টো নতুন আদিবাসী ভবন হবে। আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর করা যাবে না। আইন করা হয়েছে৷ কিছু বিএলআরও দুষ্টুমি করেছে। কোনও অভিযোগ থাকলে, আমাদের জানাবেন।’‌

আরও পড়ুন:‌ বেতন বৃদ্ধি করতে হবে, দাবি তুলে আন্দোলনের পথে কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা

অন্যদিকে প্রশাসনিক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার একাধিক বাসিন্দাকে জলকল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার কথা জানান। ওই সভা থেকেই একাধিক ইস্যুতে বিজেপিকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌এপ্রিল মাসের মধ্যে গরিবদের বাড়ি তৈরি করে না দিলে কী করি দেখে নেবেন।’‌ অর্থাৎ বড় পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। জঙ্গলমহলে ইন্দ্রনীল সেনকে পর্যটন সার্কিট করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সারি এবং সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি না দিলে বড় আন্দোলন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‌ফরেস্ট রাইটস অ্যাক্টের অধীরে ৪৮ হাজার ৬৭৩ জন ফরেস্ট পাট্টা দেওয়া হয়েছে। বিডিওদের অনুরোধ করব, প্রত্যেক এলাকায় যান। উন্নয়নমূলক কাজ করুন।’‌

এছাড়া সভা মঞ্চেই ভিন্ন মেজাজে ধরা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার সঙ্গে আদিবাসী নাচের ছন্দে পা মেলান মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে দাঁড়িয়েই মাদলও বাজান। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এমনভাবে পেয়ে খুশি সকলেই। তবে তাঁর আক্রমণ, ‘‌এবার আবার যদি ওরা জিতে যায় গ্যাসের দাম ১৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা করে দেবে। আবার সেই ঘুঁটে দিতে হবে। আমাদের বাংলাকে ওরা ভালবাসে না। ওরা আদিবাসীদের ভালবাসে না। আধার কার্ড কেন কেড়ে নেওয়া হল? আধার কার্ড কেড়ে নেওয়া হলে আমরা পাল্টা দেব। আমরা কারও কাছ থেকে অধিকার কেড়ে নিতে দেব না। নির্বাচন এলেই এরা বলে সিএএ করবে। বিজেপি হয়ে থাকতে হবে। এগুলি সব ছলনা মনে রাখবেন। খুনোখুনি আর নয়, অনেক রক্ত ঝরেছে। এবার উন্নয়ন করতে হবে। একসময় ঝাড়গ্রামে রক্ত ঝরত। আমি তখন পথে পথে ঘুরতাম। আর যেন রক্ত না ঝরে।’‌