বেতন বৃদ্ধি করতে হবে, দাবি তুলে আন্দোলনের পথে কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা

ভাতা বাড়াতে হবে। আর তার দাবিতে সরব হলেন একাধিক কলেজের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ছবি টাঙিয়ে বেতন বৃদ্ধির দাবি তুলল বেঙ্গল এলিজেবল কলেজ ও ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (‌বেকুটা)‌। তবে এই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে ২০১৯ সালে ৬০ বছর পর্যন্ত মেয়াদ করে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। তখন থেকেই তৈরি হয় ‘স্যাক্ট’। আবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ বাতিল করে দেয় আচার্য। তার প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে নেমেছে ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’। কর্মীদের সঙ্গে অস্থায়ী শিক্ষকরাও ছিলেন। তাঁদের বেতন বৃদ্ধিও স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে এই স্যাক্টদের দু’টি ভাগ আছে। একটি ভাগে আছেন নেট, সেট, পিএইচডি থাকা শিক্ষকরা। তাঁদের বলা হয় ‘স্যাক্ট ওয়ান’। আর বাকি সবাই ‘স্যাক্ট টু’। বেকুটা সংগঠন প্রধানত স্যাক্ট ওয়ান শিক্ষকদের। যদিও তাঁরা সব চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরই ভাতা বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন। সারা রাজ্যে স্যাক্ট ওয়ানে প্রায় ৩০০০ শিক্ষক আছেন। এইসব শিক্ষকদের বক্তব্য, ২০২০ সাল থেকে তাঁরা মাসে ৩৫ হাজার টাকা বেতন পান। প্রত্যেক বছর তিন শতাংশ করে বেতন বৃদ্ধি হয়। এখন তাঁদের বেতন দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার টাকা। অবসরের সময়ে একসঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা গ্র্যাচুইটি পাওয়ার কথা। কিন্তু তাতে খুশি নন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা। তাই সবই বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন:‌ তৃণমূলের ব্রিগেডের দিনই পথে নামছে সিপিএম, ১০টি জায়গায় পাল্টা সমাবেশের সিদ্ধান্ত

অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী দু’দিন আন্দোলনের জেরে ফিনান্স বিভাগ কাজ করতে না পারলে মাসের শুরুতে শিক্ষক, অফিসার, কর্মীদের বেতন দিতে সমস্যা হতে পারে। আজ, বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত নয়াদিল্লি থেকে ফিরে আন্দোলনকারী কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন। তারপর জট খোলে কিনা সেটাই দেখার। এই আবহে বেকুটা সংগঠনের দাবি, স্থায়ী শিক্ষকদের তুলনায় এই বেতন তিন ভাগের এক ভাগও নয়। তাই দাবি উঠেছে, অবসরের বয়স বাড়িয়ে ৬৫ করা, গ্র্যাচুইটি অন্তত ১০ লক্ষ টাকা করা এবং ভাতা বৃদ্ধি করা। ২০১৯ সালের আগে এই শিক্ষকরা ২২ হাজার টাকা ভাতা পেতেন।

এছাড়া এই খবর এখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তাতে ইন্ধন পেয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন। এই বিষয়ে বেকুটা সংগঠনের সম্পাদক নীলোৎপল জানা বলেন, ‘আমরা দাবি তোলার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি। এমন অনেক কলেজ আছে যেখানে যদি ১০ জন স্থায়ী শিক্ষক থাকেন, তা হলে আমাদের মতো শিক্ষক আছেন ৮০ জন। সুতরাং ধর্মঘট হলে কলেজগুলিতে অচলাবস্থা শুরু হবে। সেই রাস্তায় আমরা হাঁটতে চাই না। পড়াশোনার ক্ষতি হোক আমরা চাই না।’