TMC on Shahjahan’s Arrest: এতদিনে নামল ‘গলার কাঁটা’, অস্বস্তি কাটিয়ে শাহজাহানের গ্রেফতারির ‘ক্রেডিট’ নিতে ঝাঁপ তৃণমূলের

শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হতেই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতিত্ব দিলেন কুণাল ঘোষ। এর আগে অভিষেক দাবি করেছিলেন, আদালতের আইনি জটেই নাকি শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। যদিও আদালত স্পষ্টতই অভিষেকের সেই দাবি মানতে চায়নি। তবে তৃণমূল নিজেদের বক্তব্যে অনড়। মানুষকে তারা বোঝাতে চাইছে, শাহজাহানকে তারা ‘রক্ষা’ করেনি। এই আবহে শাহজাহান গ্রেফতার হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের অভিষেককে ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন’ করলেন কুণাল। তৃণমূল মুখপাত্র নিজের বার্তায় লেখেন, ‘আদালতের বাধা ছিল, পুলিশ কাজ করতে পারেনি। অভিষেক বন্দ্যোরাধ্যায়ের সৌজন্যে আদালত বাধা সরিয়েছে। পুলিশ যা করার করেছে।’ (আরও পড়ুন: গ্রেফতার শেখ শাহজাহান, ৫৫ দিন কোথায় ‘লুকিয়ে’ ছিলেন সন্দেশখালির ‘বাঘ’?)

আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ রাজ্যে…’, বড় মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর

এরপর বিজেপিকে তোপ দেগেও একটি বার্তা পোস্ট করেন কুণাল। তাতে লেখা, ‘রাজ্য পুলিশ তো কাজ করল। এবার নারদ মামলার এফআইআর-এ নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারী এবং আলকেমিস্ট চিট ফান্ডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর মিঠুন চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করুক সিবিআই। এবার মহিলা কুস্তিগীরদের সঙ্গে অসভ্যতার নায়ক ব্রিজভূষণ গ্রেফতার হোক। এবার দেশের ব্যাঙ্ক লুঠেরাদের ধরুক ইডি।’

আরও পড়ুন: এক ধাক্কায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া কমাল রেল, ভোটের আগে বড় উপহার যাত্রীদের

এর আগে গত ২৫ তারিখ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘শেখ শাহাজাহানকে ধরার ক্ষেত্রে রাজ্যের হাত বেঁধে রেখেছে বিচার ব্যবস্থা’। তবে এর একদিন পরই ২৬ ফেব্রুয়ারি, হাই কোর্টের তরফ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সেই দাবি কার্যত খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, শেখ শাহজাহানকে গ্রেফাতারি কোনও বাধা নেই। পাশাপাশি সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে যুক্ত করার নির্দেশও দিয়েছিলেন উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।

শাহজাহান প্রসঙ্গে অভিষেক বলেছিলেন, ‘ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার অভিযোগ করে ইডির দায়ের করা মামলার তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বিশেষ তদন্তকারী দলের তৈরির নির্দেশ দেন। সেই দলে থাকার কথা ছিল রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইয়ের এক জন করে প্রতিনিধির। এর কিছুদিন পরে ইডি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন করে ওই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চায়। ইডির আবেদনের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ সেই স্থগিতাদেশ মঞ্জুর করে। স্থগিতাদেশ মানে তদন্ত হবে না। স্থগিতাদেশ মানে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। স্থগিতাদেশ মানে কাউকে নোটিশ পাঠিয়ে ডাকা যাবে না। এটা কে করেছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এটা করেছে হাইকোর্টের বিচারপতি। সেই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৬ মার্চ। হাইকোর্ট, বিচারব্যবস্থা যদি রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের হাত পা বেঁধে দেয়, এফআইআর স্থগিত করে দেয়, তাহলে পুলিশ গ্রেফতার করবে কী ভাবে?’ 

অবশ্য অভিষেকের মন্তব্যের বিষয়টি হাই কোর্টে উত্থাপন করেছিলেন আদালত বান্ধব। সেই সময় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেছিলেন, ‘শাহজাহানকে গ্রেফতার না করার জন্য পুলিশকে কোনও নির্দেশই দেওয়া হয়নি। আমরা পুলিশকে বলিনি, যে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। ইডির মামলায় শুধু সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল।’ তবে এরপরও সিট গঠন মামলার রায় দেখিয়ে তৃণমূল দাবি করে, আইনি জটেই শাহজাহানকে ধরা সম্ভব হয়নি এতদিন। এমনকী ‘আইনি জট’ খোলার জন্য পরোক্ষ ভাবে অভিষেককেই ধন্যবাদ জানান তৃণমূল নেতারা। পরে তৃণমূল নেতারা দাবি করেন, ৭ দিনের মধ্যে শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হবে। অবশ্য সেই ‘ডেডলাইনের’ অনেক আগেই পুলিশের জালে জড়িয়েছে শাহজাহান। আর শাহজাহানের গ্রেফতারির কৃতিত্ব নিয়ে ‘খেলা ঘোরাতে’ মরিয়া তৃণমূল।