ব্যান্ডেল স্টেশনে রেখে দিয়েছিল ছেলে, বৃদ্ধাকে ২ মাস পর বাড়ি ফেরাল প্রশাসন

স্টেশনে পড়ে থাকা অসহায় এক বৃদ্ধা ছেলের নাম বলতে পারেননি। তবে নাতনি এবং তার স্কুলের নাম বলতে পেরেছিলেন। সেই সূত্র ধরে বৃদ্ধার বাড়ির ঠিকানা জানতে পেরেছিলেন এক পুলিশ কর্মী। অবশেষে ওই পুলিশকর্মীর তৎপরতায় ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি ফেরাল প্রশাসন। ওই বৃদ্ধার নাম রীনা পাল। তিনি দুর্গাপুরের ফরিদপুরের বাসিন্দা। তার ছেলে তাকে ব্যান্ডেল স্টেশনে রেখে গিয়েছিল। অবশেষ পুলিশ কর্মী সুকুমার উপধ্যায়ের উদ্যোগে ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি ফেরানো সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুন: বৃদ্ধা শাশুড়িকে বাড়িছাড়া করল মহিলা আইনজীবী, পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট আদালত

জানা গিয়েছে, মাস দুয়েক আগে ওই বৃদ্ধাকে স্টেশনে ফেলে গিয়েছিল তার ছেলে। পুলিশ কর্মী সুকুমার উপাধ্যায় চন্দননগরের পুলিশ কনস্টেবল। তিনি নবদ্বীপ থেকে ডেইলি প্যাসেঞ্জার করেন। কয়েকদিন আগে তিনি ব্যান্ডেল স্টেশনের ৭ নম্বর প্লাটফর্মে ওই বৃদ্ধাকে অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তিনি ওই পুলিশ কর্মী ডিউটি শেষে বাইকে করে ব্যান্ডেল স্টেশনে গিয়ে বৃদ্ধার খোঁজ নেন। বেশ কয়েকদিন ওই বৃদ্ধাকে তিনি খাওয়ান এবং তার সঙ্গে গল্প করে তার ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন পুলিশ কর্মী। তবে বৃদ্ধা তার ছেলের ঠিকানা জানাতে পারেননি। তবে বলেছিলেন তার এক নাতনি আছে। তার নাম মিষ্টু, সে বেনাচিতির একটি স্কুলের ক্লাস দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। তবে কোন স্কুলের পড়ুয়া তা জানাতে পারেননি বৃদ্ধা। এরপর সুকুমার এটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে বেনাচিতীর ১২টি স্কুলে খোঁজ চালান. শেষ পর্যন্ত একটি স্কুলে বৃদ্ধার নাতনির খোঁজ পান। সেই সূত্রেই বৃদ্ধার ঠিকানা জানা যায়। এরপর বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

এদিকে, খবর পেয়ে হুগলি জেলা প্রশাসন তড়িঘড়ি বৃদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। হুগলি জেলাশাসনের ওয়েলফেয়ার দফতরের তরফ থেকেও বৃদ্ধার বাড়ি এবং তার ছেলের খোঁজ চালানো হয়। তবে সুকুমার বাবু বৃদ্ধার বাড়ির খোঁজ জানানোই অতিরিক্ত জেলা শাসক অমিতেন্দু পাল বৃদ্ধাকে বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকেও যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সেই সূত্রে হাসপাতাল থেকে দুটি গাড়িতে সোসাল ওয়েলফেয়ার অফিসের অফিসার, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আরোগ্যর কর্ণধার ইন্দ্রজিৎ দত্ত এবং পুলিসকর্মী সুকুমার উপাধ্যায় বৃদ্ধাকে নিয়ে দূর্গাপুরের বাড়িতে যান। জানা গিয়েছে, ওই পুলিশ কর্মী এই ধরনের সমাজ সেবামূলক কাজ করে থাকেন। এর আগেও তিনি এইভাবে একাধিক ভবঘুরেকে ঘরে ফিরিয়েছেন। আর এবার ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি ফেরালেন।