রাজ্যের স্কুলগুলি চলে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে, অন্ধকারে পর্ষদ, শিকেয় পঠনপাঠন

সামনে লোকসভা নির্বাচন। মার্চ মাসের ১৪ তারিখে লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আজ ১ মার্চ রাজ্যে পা রাখছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্ঘণ্ট ঘোষণার প্রাক্কালেই ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে বাংলায়। প্রথম দফায় ১০০ কোম্পানি, দ্বিতীয় দফায় আরও ৫০ কোম্পানি। আর তাদের থাকার জন্য বিভিন্ন স্কুলগুলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তাই পঠনপাঠন লাটে উঠতে চলেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। তারা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে পঠনপাঠন ব্যাহত করা চলবে না। বেশ কিছু স্কুলে বন্ধ হয়েছে ক্লাস। এই বিষয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে রীতিমতো অন্ধকারে রেখে কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ।

এদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখতে উত্তর কলকাতার বেথুন স্কুলকে বাছা হয়েছে। ওই স্কুলে স্থানীয় থানা থেকে নোটিশ এসেছে। সুতরাং আজ, শুক্রবার স্কুলের সমস্ত ক্লাস বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই সব ক্লাসকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু শুক্রবার নয়, এখন থেকে বেথুনে পঠনপাঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কারণ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা স্কুলে থাকতে শুরু করলে স্বাভাবিক পঠনপাঠন ব্যাহত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এখন কী ভাবে ক্লাস হবে সেটা নিয়ে পরবর্তী সময়ে স্কুলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে ছাত্রীদের। ইতিমধ্যেই নানা স্কুলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার সময়সীমা বদল হচ্ছে। পঠনপাঠন স্থগিত থাকবে। কারণ, নির্বাচনের কাজে রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুলেই থাকবে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌হাতি মানুষ মারলে ওঁদের কানে কান্না পৌঁছয় না’‌, পরিবেশ কর্মীদের তুলোধনা মমতার

অন্যদিকে রাজ্য সরকারের একাধিক স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে বলে চিঠি গিয়েছে থানা থেকে। সেই তালিকায় আছে যাদবপুরের তিনটি স্কুল, উত্তরপাড়ার একটি স্কুল। আর রাজ্যের একগুচ্ছ স্কুলেও এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘প্রথম পর্যায় ক্রমিক মূল্যায়ন এপ্রিল মাসের প্রথমে। তার আগে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা, স্পোর্টস, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা থাকায় পঠনপাঠন ব্যাহত হয়েছে। এরপর লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়গুলিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার জায়গা হলে পঠনপাঠন সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যাবে।’

এছাড়া মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এই খবর পেয়ে মাথায় হাত দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি শুনেছেন তিনি। কোনও পক্ষ তাঁকে সরকারিভাবে কিছু জানায়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার জন্য যে বেশ কয়েকটি সরকারি স্কুলকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা পর্ষদ জানে না। প্রশাসন বা স্কুলের পক্ষ থেকে পর্ষদকে বিষয়টি জানানো হয়নি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। মার্চের প্রথম দিনই যদি এভাবে সরকারি স্কুল নিয়ে নেওয়া হয় তাহলে পঠনপাঠনের সমস্যা হবে। সামনে নানা পরীক্ষা রয়েছে।’‌