‘‌আমি ওর হয়ে কাজ করব না’‌, মমতাকে বার্তা দিয়ে সুদীপকে তুলোধনা করলেন তাপস

রাজ্য–রাজনীতিতে এখন বড় খবর হয়ে দাঁড়িয়েছে কুণাল ঘোষের সরে দাঁড়ানোর ঘটনা এবং অভিমানী সুর ভাসিয়ে দেওয়া। সদ্য বেশ কয়েকটি পোস্ট এক্স হ্যান্ডেলে করে নিজের কথা তুলে ধরেছেন কুণাল। তাতে দলের অস্বস্তি বেড়েছে। কারণ ক্ষোভটা দলের সাংসদের বিরুদ্ধেই। তবে তিনি কারও নাম করেননি। এরপর সরে দাঁড়িয়েছেন। সেখানে কুণাল ঘোষের পাশে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ এবং বর্ষীয়ান তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তাপস রায়। তাতে আরও জলঘোলা হয়েছে। কুণাল এবং তাপসের সঙ্গে বরাবরই শীতল সম্পর্ক সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই তাঁকে নিয়েই আবার দলের অন্দরে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গোলমাল শুরু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই আবহ তৈরি হওয়ায় অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছে। কারণ সামনেই ১০ মার্চ ব্রিগেড সমাবেশ। তার আগে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আশা করা যাচ্ছে হস্তক্ষেপ করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নাম না করলেও নিশানায় উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কুণাল ঘোষের পর এবার মুখ খুলেছেন তাপস রায়। বরাহনগরের বিধায়ক এবার বলেন, ‘‌আজকে কুণাল যে কথাটা বলছে, সেটা আমার ক্ষেত্রে হয়ে আসছে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। কত বছর হল। এই চলছে। আমি জানি না আমার উপর রাগ কেন। সেটা প্রকাশ্যেই বলে দিক না। রাজনৈতিকভাবে আমাকে ভয় পায়, আবার কী। কোনও কাজ করে না, ভোটের আগে ৩ মাস দেখা যায়। শুধু ফায়দা নিয়ে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেও ভোটে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে কোনও কাজ করব না।’‌

আরও পড়ুন:‌ কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতেই তৎপর বিরোধীরা, টহলদারি শুরু করার দাবি উঠতে শুরু করেছে

কুণাল ঘোষ নাম না নিলেও হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন তাপস রায়। বর্ষীয়ান এই বিধায়ক পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন কুণাল যা বলেছেন তা সুদীপের বিরুদ্ধেই। তাই তো এবার তাপস রায়ের বক্তব্য, ‘‌সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গর্ব করে বলে, আমার সঙ্গে অমুকের এই সম্পর্ক। কালকের বৈঠকেই নাকি বলেছে, আমি অমিত শাহজিকে বললাম, তুমি একবারের এমপি, আমি পাঁচবারের এমপি। এবার ৬ বারে যাব। আমি দেখব সেটা। অনেক দিন আগেই বলে দিয়েছি। আমার পক্ষে ওর হয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। আমি ওর হয়ে কাজ করব না।’‌

বিদ্রোহের আগুন এবার লেলিহান শিখা তৈরি করেছে দলের অন্দরে। এই পরিস্থিতি কমব্যাট করতে হলে রাস্তা দুটি। এক, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে টিকিট না দিয়ে তাপস বা কুণালকে দেওয়া। দুই, অভিষেকের হস্তক্ষেপে এই তিনজনকে নিয়ে বসে বিরোধ মেটানো। তবে কোন পথে হাঁটবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব সেটা এখনও অজানা। তবে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল কংগ্রেসের জোড়া পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। কুণালের কথায়, ‘‌উত্তর কলকাতায় সুদীপদা একটা বড় সাইজের শাহাজাহান। সব ফুল রেখে চলে। বিজেপির দালাল। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে রোজভ্যালি কেস থেকে বাঁচিয়ে রেখেছে মোদী সরকার।’‌