কৃষ্ণনগরের সভায় মহুয়াকে আক্রমণ করলেন সুকান্ত–শুভেন্দু, নীরব রইলেন মোদী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষ্ণনগরে সভা করার আগে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আক্রমণ শানান মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। আর সামনে লোকসভা নির্বাচন। এখান থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে মহুয়ারই। তাই আজ, শনিবার আক্রমণের অভিমুখ তৈরি করে দেন সুকান্ত–শুভেন্দু। এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুরুর আগে বক্তব্য রাখেন শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদার। সেখানে তিনি মহুয়া মৈত্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। কিন্তু এই বিষয়ে নীরব ছিলেন মোদী। অনেকেই ভেবেছিলেন কৃষ্ণনগরে এসে মহুয়া মৈত্র নিয়ে মুখ খুলবেন মোদী। কিন্তু বেশ অবাক করে দিয়েই কৃষ্ণনগরের মাটিতে দাঁড়িয়ে মহুয়া প্রশ্নে নীরব রইলেন মোদী।

এদিকে আজ, শনিবার কৃষ্ণনগরের সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে তুলোধনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে মহুয়া মৈত্রকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‌মনে আছে তো আমাদের আরাধ্য দেবী মা কালীকে অপমান করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। এবারের নির্বাচনে মহুয়ার ওই বক্তব্যের বদলা নিতে হবে ইভিএমে।’‌ সুকান্ত মজুমদার অবশ্য মহুয়ার নাম উল্লেখ না করে বলেছেন, ‘‌এখানকার সাংসদ বলেছিলেন, মা কালী নাকি মদ খান। লিপস্টিক, পাউডারের লোভে সাংসদ নিজের লগ ইন পাসওয়ার্ড দিয়ে দেন। তারপরও তাঁকে জেলা সভাপতি করে রেখেছে তৃণমূল।’‌ এতকিছুর পরও কিন্তু নীরবই থাকলেন মোদী।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই আমরা বাংলার ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব’‌, বৈঠকের পর বার্তা শুভেন্দুর, পাল্টা দিল তৃণমূল

অন্যদিকে কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে বড় বিতর্ক হয়েছে মাস কয়েক আগেই। ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে তাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০২২ সালের জুলাই মাসে পরিচালক লীনা মণিমেকলাইয়ের তথ্যচিত্র ‘কালী’ নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তখন বলেছিলেন, তাঁর কাছে কালী হলেন মদ–মাংস খান এমন দেবী। কালীকে হিন্দু ধর্মে ইচ্ছেমতো কল্পনা করার অধিকার আছে। মহুয়ার ওই বক্তব্য বিতর্কের ঝড় তুলেছিল। সে প্রসঙ্গ দু’‌বছর পর তুলে বিজেপি ফায়দা নিতে চাইছে। তারপরও মহুয়াই যে আবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হবেন সেটা সম্প্রতি স্পষ্ট করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এছাড়া কেন মহুয়া প্রসঙ্গ তুললেন না মোদী? বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মোদী উপেক্ষা করেছেন মহুয়াকে। মোদীজি যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন, তাতে তিনি এমন একজনের কথা বলবেন না সেটাই স্বাভাবিক। মহুয়ার পরিচয় তুলে ধরার জন্য রাজ্য নেতারাই যথেষ্ট। তাই প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি। মহুয়া যদিও করিমপুরের একটি দোকানে বসে ডালপুরি খাওয়ার একটি ছবি পোস্ট করে মোদীকে ওই দোকানের ‘বিখ্যাত ডালপুরি’ খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু মোদী বিষয়টি নিয়ে নীরবই রইলেন। এখানে মহুয়াকে আবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করলে সেটা বিজেপির পক্ষে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের হবে। বিজেপি কি মহুয়া আতঙ্কে ভুগছে?‌ তাই আক্রমণ করলেন সুকান্ত ও শুভেন্দু।