পরিবারকে দেওয়া হল দুই মৃত শিশু, কিন্তু যমজ হয়নি প্রসূতির, বলছে হাসপাতাল

প্রসূতির গর্ভে শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল চন্দননগর মহাকুমা হাসপাতালে। পরিবারের অভিযোগ, প্রসূতির গর্ভে যমজ সন্তান ছিল। দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে। এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়সারা মনোভাবকে দায়ী করে বিক্ষোভ করেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের বক্তব্য, প্রসূতির গর্ভে যে যমজ সন্তান ছিল তারা তাদের জানানো হয়নি। যদিও যমজ সন্তান থাকার কথা অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে বিক্ষোভ করেন পরিবারের সদস্যরা। ঘটনায় প্রসূতির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে শিশু মৃত্যু বেড়ে ১৪, খতিয়ে দেখল প্রতিনিধি দল

কী ঘটেছিল?

পরিবারের দাবি, চন্দননগরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের রেল আবাসনের বাসিন্দা বছর উনিশের পিয়ালি রাজভর চৌধুরীর প্রসব যন্ত্রণা উঠেছিল গত শনিবার। এই অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, হাসপাতালের তরফে তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয় কোনও রকমের সমস্যা নেই। ফলে ওইদিন চিকিৎসকরা প্রসূতিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর মঙ্গলবার ফের প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় প্রসূতিকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর চিকিৎসকরা দেখেন গর্ভাবস্থায় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, বুধবার পর্যন্ত প্রসূতির কোনও অস্ত্রোপচার করা হয়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। তাদের বক্তব্য, এর ফলে প্রসূতির ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু, হাসপাতলের তরফে বিষয়টি বোঝানো হলে তাদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার স্বাভাবিক নিয়মেই মৃত সন্তান প্রসব করেন পিয়ালি।

কিন্তু, তারপরেই ঘটে বিপত্তি। হাসপাতালের তরফে দুটি মৃত সন্তান পিয়ালির পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাতে ক্ষোভ তৈরি হয় আত্মীয়দের মধ্যে। তাদের বক্তব্য, পিয়ালির গর্ভে যমজ সন্তান ছিল তা হাসপাতালের তরফে একবারও তাদের জানানো হয়নি। অভিযোগ, হাসপাতালের দায়সারা মনোভাবের কারণে এমনটা হয়েছে। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চন্দননগর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পিয়ালির গর্ভে একটিই সন্তান ছিল। তার পাশে অন্য এক অন্তঃসত্তার গর্ভপাত হয়। তার গর্ভে পুত্র সন্তানের ভ্রূণ ছিল। সেই ভ্রূণ ভুলবশত পিয়ালির পরিবারে হাতে তুলে দেওয়া হয়। তার গর্ভে জমজ সন্তান ছিল না। এ বিষয়ে ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতালে সুপার ধানব্রত মণ্ডল। তিনি জানিয়েছেন, অপারেশন থিয়েটার থাকা নার্সিং স্টাফের গাফিলতির ফলেই এমনটা হয়েছে। তার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।