এখনই জলের ঘাটতি দেশের ৫৪০টি জেলা, এপ্রিল থেকে পড়বে তীব্র গরম! সতর্ক করল IMD

গ্রীষ্মের সূচনা, উদ্বিগ্ন ভারত। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) থেকে পাওয়া তথ্য ইঙ্গিত করে যে আবারও চরম জল সংকটের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারত। ইতিমধ্যেই পালঘর, সাংলি, সোলাপুর, পুনের মতো উল্লেখযোগ্য এলাকা সহ ৫৪০ টিরও বেশি জেলা জল নিয়ে চাপে পড়েছে।

IMD-এর স্ট্যান্ডার্ডাইজড রেসিপিটেশন ইভাপোট্রান্সপিরেশন ইনডেক্স (SPEI) অনুসারে, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯৮টি জেলা বেশ ভালোরকম শুষ্ক অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, বিশেষ করে উপদ্বীপ, মধ্য এবং পশ্চিম ভারতে, বাষ্পীভবনের হারকে প্রভাবিত করছে, ফসলের চাপকে বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে পালঘরের মতো উপকূলীয় অঞ্চলে, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্ণাটক, কেরালা এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলিতে জলের ঘাটতি চরমে পৌঁছোচ্ছে।

আইএমডি বিজ্ঞানী রাজীব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে উপকূলীয় জেলা পালঘর, সোলাপুর, সাংলি, পুনে, রাজকোট, জুনাগড়, দ্বারকা, মহীশূর, এর্নাকুলাম, ত্রিশুর, বেলগাঁও, রায়গড়, রত্নাগিরি, ত্রিবান্দ্রম, মাদুরাই এবং ভেলোর।’তিনি বলেছিলেন যে মুম্বাই সহ আরও ৪৪২ জেলাও শুষ্ক অবস্থা দেখাতে শুরু করেছে, যদিও ৯৪ টির মতো গুরুতর নয়। ওই বিজ্ঞানীর মতে, ‘আগামী মাসগুলিতে বাষ্পীভবনের হার আরও বেশি হতে পারে এবং মধ্য ও উপদ্বীপের ভারতের কিছু অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা প্রত্যাশিত। উপকূলীয় জেলা হওয়া সত্ত্বেও, পালঘর এমনকি পশ্চিম উপকূলে দিনের বেলা খুব তাপমাত্রার কারণে মাঝারিভাবে শুষ্ক অবস্থা দেখাতে শুরু করেছে।’

গরম পড়তে না পড়তেই শুষ্ক অবস্থার এমন সূত্রপাত পরবর্তীতে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। সামনের মাসগুলিতে যে কী হতে চলেছে, ভাবাই যাচ্ছে না। দক্ষিণ কর্ণাটক, পশ্চিম কেরালা, মহারাষ্ট্রের কিছু অংশ এবং তামিলনাড়ুর মতো অঞ্চলগুলি ইতিমধ্যে বাষ্পীভবনের হার এবং জলের চাপের সম্মুখীন হচ্ছে৷ IMD দ্বারা প্রকাশিত ডেটা জেলা জুড়ে বিস্তৃত শুষ্কতা তুলে ধরেছে বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম ভারত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে IMD। বলা হচ্ছে পর্যাপ্ত প্রাক-মৌসুমি বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিশেষ করে এপ্রিল মাস থেকেই চরম তাপমাত্রা ও জল সংকটের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারত।

IMD-এর সর্বশেষ SPEI মানচিত্র বেশিরভাগ জেলা, এমনকি উত্তর-পশ্চিম ভারতেও হলুদ হিসাবে দেখায়, যা হালকা শুষ্ক অবস্থার ইঙ্গিত দেয়। এবং আরও কয়েকটি জেলা মেরুন, লাল এবং কমলা রঙের, যা যথাক্রমে অত্যন্ত, গুরুতর এবং মাঝারিভাবে শুষ্ক অবস্থা নির্দেশ করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু অংশে, আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে হালকা শুষ্ক অবস্থা দেখতে শুরু করেছি।

উল্লেখ্য, জল সংকট কৃষির বাইরেও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। বাঁধ ও খালের জলের স্তর, পানীয় জলের প্রাপ্যতা এবং জনস্বাস্থ্যকে ব্যাপক ভাবে চাপে ফেলতে পারে জলের অভাব। এই সংকট মোকাবেলায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জলের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন। জল সংকটের প্রভাব কমানোর জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ করাও জরুরি।