তাপস রায়ের মান ভাঙাতে দূত হয়ে গেলেন ব্রাত্য–কুণাল, তৃণমূলে এখন কঠিন অঙ্ক

দলের অন্দরে এখন তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উত্তর কলকাতার সাংসদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়বার সিদ্ধান্ত নেন বিধায়ক তাপস রায়। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন অঘটন ঠেকাতে তাপস রায়ের বাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেসের দূত হাজির হল। দলের প্রবীণ বিধায়কের মান ভাঙাতে সকালেই তাপস রায়ের বাড়িতে পৌঁছন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং কুণাল ঘোষ। বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়ের মান ভাঙাতে শেষ চেষ্টা করে দেখছেন তাঁরা। তবে বিধায়কের মান ভঞ্জন হবে কি না সেটা বলবে সময়ই। তবে দলের পক্ষ থেকে শেষ চেষ্টা করা হচ্ছে।

কিছুদিন ধরেই রাজ্যের প্রবীণ বিধায়ক তাপস রায় চড়া সুরে কথাবার্তা বলছেন। দলীয় নেতৃত্বকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বরানগরের বিধায়ক। তাঁর প্রতি দলীয় বঞ্চনার অভিমান শোনা গিয়েছে তাপসবাবুর মুখেই। কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন তাপস রায়। এমনকী কাজ করবেন না ওঁর হয়ে এটাও বলেছেন তাপস রায়। কুণাল ঘোষ আজ বলেন, ‘‌আমি প্রায়ই তাপসদার বাড়িতে আসি। আজও এসেছি। নানা বিষয়ে কথা হয়।’‌ তৃণমূল কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতাই এটাকে নিতান্তই সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেছেন। কিন্তু এটা মান ভাঙানোর জন্য আগমন বলেই মনে করছেন সকলে।

আরও পড়ুন:‌ দিঘা–পুরী–বারাণসীতে গেস্ট হাউসের ব্যবস্থা করছে বর্ধমান পুরসভা, ভাড়া এখন নাগালেই

এদিকে দলের বহু পুরনো সৈনিক তাপস রায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সঙ্গী। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসেন। তারপর থেকে আর দলবদল করেননি। তবে ইদানিং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছিল তাপস রায়ের। উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি পদ থেকে তাপস রায়কে সরিয়ে দেওয়া থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। তিনি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তুমুল আওয়াজ তুলেছেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় দল ছাড়ার কথা ভাবেন তিনি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে সুদীপের হয়ে কাজ করবেন না বলেও শীর্ষ নেতৃত্বকে জানান তিনি। তারপরই তাপস রায়ের বউবাজারের বাড়িতে চলে যান ব্রাত্য বসু ও কুণাল ঘোষ।

অন্যদিকে কুণাল ঘোষও সম্প্রতি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সুদীপের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কুণাল। প্রকাশ্যেও সমালোচনা করেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলের বায়ো বদল করেন। তবে দলের কর্মসূচিতেও আছেন তিনি। তাপস রায়ের মতো দীর্ঘদিনের মমতা–অভিষেকের সৈনিক দল ছাড়লে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই তাঁর বাড়িতে দূত হয়ে এলেন ব্রাত্য–কুণাল। তাপসের মান ভাঙাতে শেষ চেষ্টা করে দেখতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‌ওনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত স্তরের সম্পর্ক আছে। আমি গল্প করি। উনি চা খাওয়ান। কোনওদিন লুচি খাই। আর তাপসদা আমাদের নেতা। আমি ওনাকে দাদার মতো দেখি। উনি আমায় ভাইয়ের মতো দেখেন।’‌