‘‌যাবতীয় মামলা খারিজ করা হোক’‌, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব কল্যাণ

বাংলায় শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের একাধিক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে গোটা দেশে লাইমলাইটে আসেন তিনি। আবার এজলাসে বসেই রাজ্যের সরকারকে নিশানা করার জেরে তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়েছে। হ্যাঁ, তিনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যিনি রবিবার খোলাখুলি রাজনীতির ময়দানে নামার কথা বলেছেন এবং মঙ্গলবার বিচারপতির পদ ইস্তফা দেবেন বলেই খবর। সুতরাং তাঁর দেওয়া আগের রায়গুলির কী হবে?‌ প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সব মামলার রায় খারিজের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে সরব হলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এদিন নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গঠিত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলে। তারই মধ্যে আইনজীবী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে বলেন, ‘আমি আবেদন নিয়ে এসেছি। এই সব যাবতীয় মামলা খারিজ করা হোক। সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি টিভি চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিয়েছেন। তিনি রাজনৈতিকভাবে এই সব অর্ডার দিয়েছেন। কিছু আইনজীবী তাঁকে আবার মদত দিয়েছেন। তার সব অর্ডার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

আরও পড়ুন:‌ ‘‌বিজেপিকে ক্ষমতায় আনলে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হবে’‌, হিরণকে পাশে নিয়ে প্রতিশ্রুতি শুভেন্দুর

অন্যদিকে ভরা এজলাসে এভাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শোরগোল ফেলে দেওয়ায় সবাই চমকে যান। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন এজলাসে অভিযোগ তোলেন, ‘তিনি একজন পলিটিক্যাল ম্যান। এমন মামলার তিনি রায় দিলেন যাতে তিনি পলিটিক্যাল কেরিয়ার গড়ে ফেললেন। এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আরও দু’জন জজ আছেন, তাঁরাও যাবেন। সিট খুঁজছেন।’ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এমন সওয়াল করলেও বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বেঞ্চ এই সওয়ালের প্রেক্ষিতে কোনও নির্দেশ দেয়নি। বেঞ্চ শুধু কল্যাণকে জানিয়ে দেয়, এই মামলায় তাঁর বলার সময় এলে তিনি বলতে পারেন।

এছাড়া বিচারপতি পদের মেয়াদ শেষের পাঁচ মাস আগে পদত্যাগ করে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাই তাঁর সমালোচনা করেছেন শিবসেনাও (উদ্ধব)। দলের সাংসদ সঞ্জয় রাউত তুলোধনা করে বলেন, ‘যদি হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের একজন কর্মরত বিচারপতি পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, তার মানে তিনি ন্যায় বিচার করেননি। একটি পার্টির হয়ে কাজ করছিলেন।’ কিছুদিন আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেনের ঝামেলা বাধে। সেটান সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারাধীন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পদত্যাগ করলেও সর্বোচ্চ আদালত কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার।