প্রাক্তন স্ত্রী’র সঙ্গে মিলে ব্ল্যাকমেল বার মালিকের? চিকিৎসকের মৃত্যুতে রহস্য

ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক কল্যাণশিস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড় নিল। মৃত চিকিৎসককে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ উঠেছে ডায়মন্ড হারবারের একটি বারের মালিক এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে। তারপরেই বারের মালিক অভিজিৎ দাসকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা এবং ব্ল্যাকমেলের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। এর পাশাপাশি অভিজিতের প্রাক্তন স্ত্রী রিয়া দাসকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। তবে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আরও পড়ুন: মায়ের শ্রাদ্ধের আগেই আত্মহত্যা চিকিৎসকের, করেছিলেন অবসাদ ভরা ফেসবুক পোস্ট

গত রবিবার কল্যাণশিসের কোয়ার্টার থেকে দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশের অনুমান ছিল অবসাদের কারণে আত্মঘাতী হয়েছিলেন তিনি। ফেসবুক পোস্টেও হতাশার কথা লিখে গিয়েছিলেন চিকিৎসক। প্রথমে এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। পরে মৃত চিকিৎসকের একমাত্র মেয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ করেন। তার মধ্যে অভিজিৎ এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর নাম ছিল। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরে দুজনকে জিজ্ঞাসা করার জন্য ডেকে পাঠায় পুলিশ।

একটি মহলের দাবি, রিয়ার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল কল্যাণশিসের। তা নিয়ে অভিজিৎ তাঁকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেল করতেন। শুধু তাই নয় রিয়াও চিকিৎসকের উপর চাপ দিতেন। এমনকী তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগেও বাধা দিতেন। বিভিন্ন সময় চিকিৎসককে ব্ল্যাকমেল করে তাঁরা মোটা টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ।

অভিজিৎ পুলিশকে জানিয়েছেন, রিয়ার সঙ্গে একাধিক পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই কারণেই রিয়ার সঙ্গে তাঁর বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বর্তমানে এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠিত কাপড়ের ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন রিয়া। দুজনে মিলে কল্যাণশিসের কাছে টাকা আদায় করেছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন কল্যাণশিসকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন এবং নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতেন। এই অবস্থায় মৃত চিকিৎসকের কাছে অভিজিৎ এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী কত টাকা নিয়েছিল? সে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

এদিকে, এফআইআর নাম থাকা আরও ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্রুত ডেকে পাঠাবে পুলিশ। ডায়মন্ডহারবার পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। খুনের হুমকি দিয়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে দুজনে মোটা টাকা আদায় করেছেন। এর পাশাপাশি চিকিৎসকের উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার হয়েছে বলেও দাবি পুলিশের। এর পিছনে আরও কি রহস্য রয়েছে? তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।