নবীন তরতাজা মুখের প্রার্থীর উপর বেশি ভরসা অভিষেকের, নতুন মুখে চাপে বিজেপি

আজ, রবিবার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ব্রিগেডের ‘জনগর্জন’ সভা থেকেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে, কোথায় কারা প্রার্থী হচ্ছেন। ৪২টি আসনের কোনওটিতেই খামতি রাখতে চাইছে না তৃণমূল কংগ্রেস। তাই প্রবীণের পাশাপাশি নবীন প্রার্থীদের বেশি করে তুলে আনা হয়েছে। এবারের লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আস্তিনের তাস তরতাজা ১০ প্রার্থী। যাঁরা নির্বাচনী ময়দানে প্রথমবার লড়ছেন। কেউ একেবারে নবাগত। কিন্তু তাঁদের উপরই ভরসা রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ এগুলি যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুপারিশ। নবীন–প্রবীণ নিয়ে দলের অন্দরে সমস্যা তৈরি হয়েছিল।

এই সমস্যা যাতে আর না তৈরি হয় তাই নবীনদের উপরই ভরসা রাখা হয়েছে। তবে নাম ঘোষণা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪২টি আসনেই একাধিক নতুন নাম শোনা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে প্রার্থী তালিকা আগে কোনও রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেনি। সেক্ষেত্রে রাজ্য–রাজনীতির আঙিনায় এটা অত্যন্ত অভিনব। এক্ষেত্রে মানুষ নিজে কানে শুনে গেলেন তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম। এলাকায় গিয়ে তা নিয়ে চর্চা করবেন তাঁরা। আইপিএস অফিসার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান এই তালিকায় আছেন। মালদা দক্ষিণেও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী নবাগত। শাহনাজ আলি রহমান।

আরও পড়ুন:‌ তৃণমূল কংগ্রেস ১১ জন বিধায়ককে লোকসভার প্রার্থী করল, জিতলে হবে উপনির্বাচন

এদিকে নবীন এই প্রার্থীদের বাছাই করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর। তবে এই প্রার্থী তালিকা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয় অভিষেকের। তারপরই তা চূড়ান্ত হয়। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিংয়ের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হন প্রাক্তন আমলা গোপাল লামা। তিনি সেখানকার মহকুমাশাসক হিসেবে বহুদিন কাজ করেছেন। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির পাশাপাশি অনীত থাপা, অজয় এডওয়ার্ডের পছন্দের মানুষ এই গোপাল লামা। বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তিনিও জাতীয় রাজনীতি ক্ষেত্রে নবাগতা।

অন্যদিকে ব্যারাকপুর থেকে টিকিট পেলেন না অর্জুন সিং। সেখানে টিকিট পেলেন পার্থ ভৌমিক। রাজ্যের সেচমন্ত্রী হলেও লোকসভার অভিজ্ঞতা নেই। বালুরঘাট থেকে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনিও প্রথম সংসদে যাবেন জিতলে। হুগলিতে এবার প্রার্থী করা হল রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আরামবাগ থেকে প্রার্থী করা হয়েছে মিতালি বাগকে। নতুন মুখ হিসাবে চমক অবশ্যই দেবাংশু ভট্টাচার্য। এটা অবশ্য বিজেপির কাছেও চমক। কারণ তমলুকে তাঁরা প্রার্থী করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তাঁর বিরুদ্ধে দেবাংশু প্রার্থী হওয়ায় চাপ বেড়েছে। কারণ দু’‌জনেই নবাগত। কাঁথিতেও নতুন প্রার্থী তৃণমূলের উত্তম বারিক। বাপি হালদার মথুরাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী তৃণমূলের। বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী বিশিষ্ট মনোবিদ ডাক্তার শর্মিলা সরকার। ঝাড়গ্রামে প্রার্থী হয়েছেন পদ্মশ্রী প্রাপ্ত সাঁওতালি সাহিত্যিক কালীপদ সোরেন। এই সবটাই নতুন মুখ।