পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ড.‌ শর্মিলা সরকার, রাজনীতিতে আসার নেপথ্যে বড় কাহিনী

ব্রিগেড থেকে জনগর্জন সভায় একধাক্কায় ৪২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জনতার দরবারে দাঁড়িয়ে এভাবে প্রার্থী তালিকা কোনও রাজনৈতিক দল আগে ঘোষণা করেনি। রাজ্য–রাজনীতিতে এমন নজির নেই। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের এই প্রার্থী তালিকা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিজেপি এখনও ৪২টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারেনি। প্রথম দফায় যে ২০টি নাম ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে থেকে একজনকে তুলে নিতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে এখন ২৩ জনের নাম ঘোষণা করতে হবে বিজেপিকে। এই আবহে লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমান কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করল নতুন মুখকে। যাঁকে কোনওদিন রাজনীতিতে পা রাখতে দেখা যায়নি।

এদিকে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর নাম ড.‌ শর্মিলা সরকার। তিনি পেশায় মনোরোগ চিকিৎসক। এবার তাঁকেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে তিনি এই এলাকায় চিকিৎসা করে বেশ জনপ্রিয় সাধারণ মানুষের কাছে। আবার তাঁর বাড়ি কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ গ্রামে। কলকাতার দমদমের বাসিন্দাও বলা যায়। কারণ এখানে তাঁর ফ্ল্যাট আছে। এখন এই চিকিৎসককে নিয়েই জোর চর্চা চলছে পূর্ব বর্ধমানে। এই পূর্ব বর্ধমান কেন্দ্রে দু’‌বারের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ রয়েছেন সুনীল মণ্ডল। এবার সুনীল মণ্ডলকে টিকিট না দিয়ে অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আরও পড়ুন:‌ একধাক্কায় ১৪টি আসন চেয়ে বসল আইএসএফ, জোটের রফাসূত্র এখনও রইল অধরা

অন্যদিকে এই চিকিৎসক শর্মিলা সরকারের কাছে অনেকেই এসে থাকেন। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বেচারাম মান্না চিকিৎসার জন্য তাঁর কাছে গিয়ে থাকেন। সেই সূত্রেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। তাই শর্মিলা সরকারের সঙ্গে কথাও হয় রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের। তখনই শর্মিলা সরকারের নাম চূড়ান্ত হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন শর্মিলা সরকার। তাঁর পরিবারের সদস্য পঞ্চায়েতের প্রধান। তবে এই প্রার্থী কোনওদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে ঘরের মেয়ে। তাই বিপুল জয় নিয়ে আশাবাদী সকলে।

এছাড়া এখন এমন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের করেছে বলে চাপে পড়ে গিয়েছে বাকি রাজনৈতিক দলগুলি। ড.‌ শর্মিলা সরকার এলাকার মানুষের কাছে অত্যন্ত পরিচিত হওয়ায় ভোট চাওয়ার অপেক্ষা রাখে না। ইতিমধ্যেই অনেকের সঙ্গে দেখা হতে তাঁরা জানিয়েছেন, আপনাকেই ভোট দেবো। এই বিষয়ে শর্মিলা সরকারের মা বলেন, ‘‌আমরা তিন দিন আগেই জানতে পারি। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বেচারাম মান্না ওঁরা সবাই আমার মেয়ের কাছে যান। আসলে ওঁদের হাউজ ফিজিশিয়ন। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আমার বাড়িতে এসেছিলেন। আমার মেয়েকে জামাই বলেছে, যদি তুমি পারো, তাহলে যুক্ত হতে পারো। তারপর ওই পিকে সাহেব না কে আছে, উনি ফোন করেন। দোড়গোড়ায় এসেছে এমন সুযোগ। মেয়ের ইচ্ছা ছিল। ব্যস, হয়ে গেল।’‌