CAA in West Bengal Latest Update: দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে CAA, মমতা কি পারেন বাংলায় নাগরিকত্ব আইন আটকাতে?

আইনে পরিণত হওয়ার দীর্ঘ ৪ বছর ৩ মাস পর দেশে কার্যকর হয়েছেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ। লোকসভা ভোটের আগে এই আইন কার্যকর করা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। একদিকে যখন সিএএ-র ‘ইতিবাচক’ দিকে তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি, অন্যদিকে এই আইন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমকে স্ট্যালিনের মতো বিরোধী নেতারা। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো দাবি করেছেন, বাংলায় সিএএ কার্যকর করতে দেবেন না তিনি। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই আইনে কি সত্যিই রাজ্য হস্তক্ষেপ করতে পারে?

উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-র মাধ্যমে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যে সব হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পারসি, শিখ এবং জৈন ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের থেকে বিচারিত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর জন্যে একটি পোর্টাল চালু করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ধর্মীয় কারণে বিচারিত শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্বের জন্যে আবেদন করতে পারবেন। এই আবহে রাজ্য সরকারের ভূমিকা কী হবে? তারা কি কারও নাগরিকত্বের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে? আদতে নাগরিকত্ব ইস্যুটি সংবিধানের সপ্তম তফশিলের কেন্দ্রীয় তালিকায় ১৭ নম্বরে রয়েছে। অর্থাৎ, নাগরিকত্বের বিষয়ে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারেরই পদক্ষেপের এক্তিয়ার রয়েছে। কোনও রাজ্য সরকার কোনও ভাবেই নাগরিকত্ব ইস্যুতে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে না ভারতে। এই আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলেও সাংবিধানিক ভাবে বাংলায় সিএএ কার্যকর রুখতে পারবেন না।

এদিকে সিএএ পোর্টালের মাধ্যমে নাগরিকত্বের যে সব আবেদন জমা পড়বে, জেলা বা রাজ্য স্তরে সেই সংক্রান্ত নথি বা যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখার দায়িত্ব যে কমিটির হাতে রয়েছে, তাতে কেন্দ্রীয় সকারি কর্মীদের সংখ্যা বেশি। সিএএ নিয়ে যে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ‘বাধা’ সৃষ্টি করতে পারে, সেই সম্ভাবনা থেকে আগেভাগেই এই নিয়ে পরিকল্পনা করে ময়দানে নেমেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং রাজ্য স্তরের সর্বশক্তিমান কমিটির চেয়ারম্যানরা কেন্দ্র নিযুক্ত। রাজ্য স্তরের কমিটির মাথায় বসবেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জনগণনা কার্যক্রমের ডিরেক্টর। এবং জেলা স্তরের কমিটিগুলির মাথায় থাকবেন সেই দফতরের সুপাররা। জনগণনা কার্যক্রমের ডিরেক্টর সোজা জাতীয় জনগণনা কমিশনার এবং ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রিপোর্ট করে থাকেন। অর্থাৎ, এখানে কোনও পর্যায়ে রাজ্যের হস্তক্ষেপের কোনও অবকাশ নেই। এই গোটা ‘কমান্ড-চেইন’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অন্তর্গত।

এদিকে আইন বা নিয়ম যাই বলুক, সিএএ ইস্যুতে সুর চড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটে একদিকে যেমন বিজেপি এই সিএএ ইস্যুকে হাতিয়ার করে মতুয়াদের মন জয় করার চেষ্টা করছে। অপরদিকে তৃণমূল সিএএ বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার ছক কষছে। মমতা নিজেই সেই আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিতে চাইছেন। এর আগেও ২০১৯-২০ সালে সিএএ বিরোধী আন্দোলন করেছেন মমতা। কলকাতার রাজপথে এই ইস্যুতে মিছিল করেছেন তিনি। এবারও শিলিগুড়িতে সিএএ বিরোধী মিছিল করার পরিকল্পনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে গতরাতে জানা গিয়েছে, সেই মিছিল বাতিল করা হয়েছে।