শিলিগুড়ি থেকে ফিরেই নিমতায় খুন হওয়া ভবানীপুরের ব্যবসায়ীর বাড়ি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকহত বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ তিনি কথা বলেন। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেফতার করছে।
খুন হওয়া ব্যবসায়ী ভব্য লখানির স্ত্রী ছাড়াও দুই নাবালক ছেলে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন তাদের সঙ্গে কথা বলেন। দুই ছেলের এক দশম শ্রেণিতে এবং অন্যজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এক ছেলে স্কুল পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালীনই সে বাবার খুন হওয়ার খবর পায়। মুখ্যমন্ত্রী পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকার মধ্যেই।
ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা অপরাধী নয় অপরাধীর থেকে বড় আপরাধী। এই খুন পূর্ব পরিকল্পিত।’
পুলিশ জানিয়েছে, রীতিমতো পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে ব্যবসায়ী ভব্য লাখানিকে। ব্যবসায়িক মিটিং আছে বলে ডাকা হয় তাঁকে। তার পর মত্ত অবস্থায় উইকেট দিয়ে মাথার পিছনে আঘাত করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বারংবার তাঁকে আঘাত করা হয়। সোমবার দুপুর একটা থেকে তিনটের মধ্যে এই খুন করা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।
আরও পড়ুন। ভবানীপুরের ব্যবসায়ীকে খুন করে জলের ট্যাঙ্কে দেহ লুকিয়ে রাখল বিজনেস পার্টনার!
খুনের পর নিমতার একটি বাড়িতে জলের ট্যাঙ্কের নীচে বস্তাবন্দি দেহ রেখে তার চারপাশে পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়। ওই ব্যবসায়ীর রক্তমাখা জামাকাপড় নিমতার ধাপায় ফেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে জামাকাপড়গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্য়ন্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ব্যবসায়ীর স্ত্রী নেহা লাখানির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। নেহা পুলিশে জানান, সোমবার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড এলাকা থেকে বেরোনোর পর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। থানায় তিনি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত নেমে বালিগঞ্জ থানার পুলিশ নিমার ওই বাড়ি থেকে ভব্যের দেহ উদ্ধার করে।
পুলিস জানিয়েছে, খুনের পর বস্তাবন্দি দেহ জলের ট্যাঙ্কের নীচে পুঁতে ফেলা হয়। রাতারাতি সেখানে পাঁচিলও তুলে দেওয়া হয়। যে বাড়ি থেকে ব্যবসায়ীর দেহ মিলেছে, সেটি অনির্বাণ গুপ্ত নামে এক যুবকের। তিনিও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের জেরার মুখে সে খুনের কথা স্বীকার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সুমন দাস নামে অন্য এক যুবকেও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো তথ্য বার করার চেষ্টা করছে অফিসাররা।