‘‌রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে চাই না’, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আবেগঘন সোনালি

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেবেলা। রাজ্য–রাজনীতিতে হঠাৎ কম্পন অনুভূত হয়। কারণ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন। তখন সব টিভি চ্যানেলে এটাই ছিল ব্রেকিং নিউজ। তারপর এসএসকেএম হাসপাতালে আসা এবং মাথায় তিনটি এবং নাকে একটি মোট চারটি সেলাই পড়ে। অডিয়ো ভিস্যুয়াল মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই রক্তাক্ত জননেত্রীর ছবি। যা নিয়ে এবার মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা ঘনিষ্ঠ নেত্রী হিসেবে পরিচিত সোনালি গুহ। জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী। এমন একজনের এভাবে আঘাত পাওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সোনালি।

দীর্ঘদিন তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন সোনালি গুহ। তারপর একুশের নির্বাচনের আগে দল বদল করে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে যান। তারপর থেকে রাজনীতির আঙিনায় এখন সোনালি অতীত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তারপরও তিনি এসেছিলেন। কিন্তু ভাঙা সমীকরণ আর জোড়া লাগেনি। তবে তিনি এতটাই মমতা–ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে, বাড়ি থেকে হাঁড়ি সব খবরই থাকত তাঁর কাছে। এখন সেসব না থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বা তাঁর কালীঘাটের বাড়ি নিয়ে সবটাই জানেন সোনালি। তাই এই রক্তাক্ত ছবি দেখে কেঁদে ফেললেন একদা ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আমি বাইরে দল নিয়ে কোনও অভিযোগ করব না’‌, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন সায়নী

এদিকে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রক্তাক্ত ছবিটি প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডেল। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপাল থেকে রক্ত গড়িয়ে নাকের উপর দিয়ে নেমে আসছিল দেখা যায়। সেই রক্ত কেন কেউ মুছে দেওয়ার কথা ভাবলেন না?‌ কেন মুছে দিলেন না?‌ এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সোনালি গুহ। সোনালি গুহ আজ আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখের রক্তটা নাক দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল। কারও কি মনে হল না আমরা দিদির রক্তটা মুছে দিই? দিদির পাড়ায় কি এমন কোনও সংস্থা ছিল না যেখানে ফোন করলেই অ্য়াম্বুলেন্স চলে আসবে?’

অন্যদিকে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের রাজনৈতিক জীবনে একটা বড় অংশ ছিলেন সোনালি গুহ। উত্থান–পতনের মধ্য দিয়ে কেমন করে দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে সেটার সাক্ষী সোনালি গুহ। মানুষের সাহায্যে কেমন করে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় সেটা খুব কাছে থেকে দেখেছেন সোনালি গুহ। বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন থেকে ক্ষমতায় আসার পুরো অধ্যায় সোনালির চোখের সামনে ঘটেছে। তাই তো রক্তাক্ত অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে চোখের জল ফেলে সোনালি বললেন, ‘আবার মমতাদি আমাকে বকুন। কিন্তু তাঁকে এই রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে চাই না।’