জঙ্গলমহলে কবে লোকসভা নির্বাচন?‌ ভোট নিয়ে বড় ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন

আজ, শনিবার ঘোষণা করে দেওয়া হল লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট। সুতরাং সবার আগ্রহের জায়গাটি তৈরি হয়েছে জঙ্গলমহলে কবে ভোট হচ্ছে? সে তথ্যও জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তাঁর ডান দিকে বসেছেন জ্ঞানেশ কুমার। বাঁ–দিকে সুখবীর সিংহসান্ধু। এখন নজরে জঙ্গলমহল। অর্থাৎ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম। এই তিন জেলাকে একসঙ্গে নিয়ে বলা হয় জঙ্গলমহল। এই তিন কেন্দ্রে ভোট হবে—পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ২৫ মে ভোট হবে।

এই তিন কেন্দ্রের মধ্যে বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া নজরকাড়া কেন্দ্র বলা যায়। কারণ এখানে বাঁকুড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে অরূপ চক্রবর্তীকে। পুরুলিয়ায় প্রার্থী করেছে শান্তিরাম মাহাতো–কে এবং ঝাড়গ্রামে প্রার্থী করা হয়েছে কালিপদ সোরেনকে। সেখানে বিজেপি বাঁকুড়ায় সিটিং এমপি ডাঃ সুভাষ সরকারের উপর আস্থা রেখেছে। পুরুলিয়া কেন্দ্রে আস্থা রেখেছে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো–কে। আর ঝাড়গ্রাম থেকে কুনার হেমব্রম সরে দাঁড়ানোয় এখানের প্রার্থী এখনও ঘোষণা করেনি বিজেপি। আর শুধু বাঁকুড়ায় বামেদের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী বাঁকুড়ায় হলেন, নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত।

এই গোটা জঙ্গলমহলে তাহলে সমীকরণ কেমন দাঁড়াল?‌ বাঁকুড়া দিয়ে শুরু করলে দেখা যাচ্ছে এখানে বিজেপির সুভাষ সরকারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তৃণমূল কংগ্রেসের অরূপ চক্রবর্তীর। তবে বাঁকুড়ায় ত্রিমুখী লড়াই বলা চলে। কারণ এখানে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে নীলাঞ্জন দাশগুপ্তকে। পুরুলিয়ায় বিজেপির জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো–কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে শান্তিরাম মাহাতোর বিপরীতে। আর ঝাড়গ্রামে একক প্রচার করে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কালিপদ সোরেন।

আরও পড়ুন:‌ মেদিনীপুরে এবার জোরদার লড়াই, লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ভোট কবে হচ্ছে?

এই সমীকরণের বাইরে এবার উঠে আসছে পরিস্থিতি। বাঁকুড়ায় বিজেপির একটা অংশ সুভাষ সরকারকে চাইছেন না। তাঁরা ইতিমধ্যেই বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে পোস্টার সেঁটে দিয়েছেন এলাকায়। সেখানে অরূপ চক্রবর্তী সংগঠনের নেতা। বাঁকুড়ায় ভাল পরিচিতি আছে। আর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ। মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে। রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্প প্রত্যেকের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। সেখানে সুভাষ সরকারের নাম এইমস দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িয়েছে। ফলে একটা বিরুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি রয়েছে বিজেপির জন্য। সিপিএম এখানে প্রার্থী দিয়েছে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে। আর দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে। সেটা যদি ঘটে তাহলে বিজেপির পরাজয় অনিবার্য। কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বামেদের ভোটই ট্রান্সফার হয়েছিল বিজেপিতে।

পুরুলিয়ায় বিজেপি জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো–কে প্রার্থী করলেও এবার পরিস্থিতি বেশ কঠিন। কারণ এখানে কাজ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আদিবাসী থেকে জনজাতি প্রত্যেকের জন্য সামাজিক প্রকল্প বাড়ানো হয়েছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের শান্তিরাম মাহাতো অনেকটা এগিয়ে লড়াই শুরু করছেন। আর ঝাড়গ্রাম থেকে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে রয়েছেন বীরবাহা হাঁসদা। সুতরাং সংগঠন খুব শক্তিশালী। তার উপর এখানে বিপুল পরিমাণ কাজ হয়েছে। সেখানে কালিপদ সোরেন পরিচিত মুখ। রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি। এমনকী রাজ্য সরকারের বঙ্গবিভূষণ পুরষ্কারও পেয়েছেন। সুতরাং এই ঝাড়গ্রাম আসনটিতে এগিয়ে আছে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।