বর্ধমান–দুর্গাপুর, আসানসোল এবং বীরভূমে ভোট কবে?‌ রাঢ়বঙ্গে এবার জমজমাট লড়াই

আজ, শনিবার ঘোষণা করে দেওয়া হল লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট। সুতরাং সবার আগ্রহের জায়গাটি তৈরি হয়েছে রাঢ়বঙ্গে কবে ভোট হচ্ছে? সে তথ্যও জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তাঁর ডান দিকে বসেছেন জ্ঞানেশ কুমার। বাঁ–দিকে সুখবীর সিংহসান্ধু। এখন নজরে রাঢ়বঙ্গ। অর্থাৎ বর্ধমান–দুর্গাপুর, আসানসোল এবং বীরভূম। এই তিন জেলাকে একসঙ্গে নিয়ে বলা হয় রাঢ়বঙ্গ। এই তিন কেন্দ্রে ভোট হবে—১৩ মে।

এই তিন কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে— বর্ধমান–দুর্গাপুরে বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার কীর্তি আজাদকে। আসানসোলে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। আর বীরভূমে প্রার্থী হয়েছেন শতাব্দী রায়। এই তিন কেন্দ্রে বামেরা এখনও কোনও প্রার্থী দেয়নি। তবে জোট হলে বা না হলে তখন তাঁরা দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে নাম সামনে আনবেন। আর বিজেপি বর্ধমান–দুর্গাপুর, আসানসোল এবং বীরভূমে কোনও প্রার্থী এখন দেয়নি। আসানসোলে পবন সিংকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু তিনি নিজেই সেখান থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

আসানসোলে এই কাণ্ড হওয়ায় অনেকটা এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পবন সিংয়ের নারীবিদ্বেষী মন্তব্য এবং গান–সিনেমার জেরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় রাজ্য–রাজনীতিতে। তার জেরে সরে দাঁড়াতে হয় পবন সিংকে। এতে ব্যাকফুটে যায় বিজেপি। এখান থেকে জিতে এসেছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। এবার তিনি আবার প্রার্থী হয়েছেন। আসানসোলে সাংসদ হওয়ার পর থেকে নিবিড় যোগাযোগ রেখেছিলেন শত্রুঘ্ন। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, বারবার সাংসদ এলাকায় ছুটে আসা এবং কাজ করে এগিয়ে রয়েছেন তিনি।

বর্ধমান–দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। আর এখানের বিজেপি সাংসদ ছিলেন সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। যাঁকে এলাকার মানুষ দেখতেও পাননি। তাই তাঁর নামে নিখোঁজ পোস্টার পড়েছিল বারবার। মানুষের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনও কাজ এখানে হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেখানে এখানের মানুষজন রাজ্য সরকারের সব সামাজিক প্রকল্প পেয়েছেন। এখানে রাস্তাঘাট, আলো এবং পানীয় জলের ভাল কাজ হয়েছে। তাই নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে আছেন কীর্তি আজাদ।

আরও পড়ুন:‌ জঙ্গলমহলে কবে লোকসভা নির্বাচন?‌ ভোট নিয়ে বড় ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন

এরপর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হচ্ছে বীরভূম। এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শতাব্দী রায়। ভরা বিজেপির হাওয়াতেও তাঁকে হারানো যায়নি। অভিনেত্রী হয়েও বারবার এখন থেকে জিতে সাংসদে গিয়েছেন শতাব্দী। এখানে বিরোধীরা কেউ প্রার্থী না দিলেও দখল করতে চাইবে বিজেপি। তবে এখানে বামেদের তেমন সংগঠন নেই। আগে ছিল। এখানে শতাব্দী রায়কে শুধু প্রার্থীদের সঙ্গে লড়তে হবে তাই নয়, লড়াই করতে হবে পরিস্থিতির সঙ্গেও। কারণ এখানের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এখন জেলে। গরুপাচারের মতো অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও তা প্রমাণিত হয়নি। তিহাড় জেলে কন্যা–সহ বন্দি কেষ্ট। তার উপর বগটুই কাণ্ড এখানেই ঘটেছে। সেটা বিরোধীরা ভোটের বাজারে উসকে দেবে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন এখানে শক্তিশালী। তাও এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতেই হবে।