মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে করা শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রতিবাদ করল তৃণমূল, পাল্টা পথে নামছে দল

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে গোটা দেশের মানুষ থেকে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা আরোগ্য কামনা করেছেন। সুস্থ হয়ে ওঠার বার্তা পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাহুল গান্ধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, নবীন পট্টনায়েক–সহ নেতারা বার্তা পাঠিয়েছেন। তখন এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা গোটা ঘটনাকে নিয়ে মস্করা করেছেন। মাথায় ও নাকে সেলাই নিয়ে বাড়ি ফিরলেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি ন্যূনতম মানবিকতা দেখাননি শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর এই মন্তব্য করার পর তেতে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি। কড়া জবাবের সঙ্গে রাস্তায় নামতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

ঠিক কী বলেছেন শুভেন্দু?‌ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান। রক্তাক্ত সেই ছবি দেখেছে গোটা দুনিয়া। আর এটা নিয়েই খেজুরির সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‌তৃণমূলের আর বেশি দিন রাজনৈতিক আয়ু নেই। বাজার খুব খারাপ। মাথা ঘুরিয়ে যাচ্ছে, আর ধপ ধপ করে পড়ে যাচ্ছে। মাথা ঘুরছে, লো প্রেসার হচ্ছে। আর ধপ ধপ করে পড়ে যাচ্ছে। পড়া তো শুরু হয়েছে ওপর থেকে। নীচ পর্যন্ত পড়া শুরু হয়ে যাবে।’ এই মন্তব্যকেই বিজেপির মহিলা বিরোধী মানসিকতা বলে আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই মন্তব্যের জেরে আজ, শনিবার রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ মিছিল এবং পথসভার ডাক দিল তৃণমূল কংগ্রেস। খেজুরিতে এই প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন কুণাল ঘোষ।

 

তৃণমূল কংগ্রেস ঠিক কী বলছে?‌ এই ঘটনা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একের পর এক আক্রমণ শানাতে শুরু করেছেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থতা নিয়ে এমম কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য নিন্দা করা হয়েছে। ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‌দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে এমন মন্তব্য বিজেপির মহিলা বিরোধী মানসিকতার পরিচয়। আমরা এই মন্তব্য করা নিয়ে তীব্র নিন্দা করছি। আর ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’‌ তৃণমূল কংগ্রেস শুভেন্দু অধিকারীর ওই মন্তব্যের ভিডিয়ো দলের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে চাই না’, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আবেগঘন সোনালি

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এই গোটা ঘটনা নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি লিখেছেন, ‘‌রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এমন কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করা আসলে নারীবিদ্বেষী মানসিকতার প্রতিফলন। এটা একটা ঘৃণ্য মন্তব্য। এটা নারী জাতির প্রতি অবজ্ঞা করার মতো মন্তব্য। মুখ্যমন্ত্রী যখন চিকিৎসাধীন তখন এমন মন্তব্য মানবিকতার শালীনতা অতিক্রম করল। এখনই তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’‌ কিন্তু ক্ষমা চাননি শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্ঘটনার জেরে চোট পাওয়া নিয়েও এবার ব্যঙ্গ করে প্রকাশ্যে অবমাননাকর মন্তব্য করলেন শুভেন্দু অধিকারী। মানুষের একটা ন্যূনতম মানবিক বোধ থাকা উচিত। কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সেই বোধ নেই।’‌