‘‌আমার অন্তরে ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’‌, অঝোরে কাঁদলেন প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস

তিনি বিধায়ক ছিলেন। এবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। তাই শেষ সভা করলেন বাগদার বিধায়ক হিসাবেই। হ্যাঁ, তিনি বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। শুক্রবার বাগদার হেলেঞ্চার নেতাজি শতবার্ষিকী কমিউনিটি হলে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। আর এখানেই দলীয় কর্মীদের সামনে আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেললেন বিশ্বজিৎ দাস। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁকে এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী করা হয়েছে। কদিনের মধ্যেই তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। তাই শেষ সভায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন বিশ্বজিৎবাবু।

এদিকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রে টিকিট দেয় বিশ্বজিৎ দাসকে। জিতেও পরে তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরেন তিনি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিশ্বজিৎকে বনগাঁ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সুতরাং বিধায়ক পদ ছাড়তে হবে। তাই বিধায়ক হিসাবে শেষ সভা করে কেঁদে ফেললেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। তাঁর দাবি, মানুষের জন্য দলবদল করে বিজেপির প্রতীকে নির্বাচনে লড়েছিলেন। কিন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বনগাঁর মানুষ যে সহায়তা করেছেন সেটা তিনি সারা জীবন মনে রাখবেন। এই কথা বলার সময়ই গলা ধরে আসে বিশ্বজিতের। কেঁদে ফেললেন। তারপর জল খেলেন। কথা বলতে গিয়ে আবারও কেঁদে ফেললেন।

আরও পড়ুন:‌ সিএএ নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনল তৃণমূল, এক্স হ্যান্ডেলে তুললেন সাকেত গোখলে

অন্যদিকে হেলেঞ্চার সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলেন বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ‘‌বাগদার মানুষ যে সম্মান,ভালবাসা আমাকে দিয়েছে সেটা কোনওদিন ভুলব না। অর্থের পিছনে দৌড়লে কখনও সম্মান পাওয়া যায় না। আমি সম্মানের পিছনে দৌড়েছিলাম। তাই সম্মান এবং অর্থ দুইই পেয়েছি। সম্মান আমাকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে প্রায় ৩৫ হাজার ভোটে জিতেছি। আমি অন্যায় দেখলে সহ্য করতে পারি না। সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছি। বহুবার বিজেপি আমাকে বলেছে, ইডি–সিবিআই লাগাচ্ছি। কালকেই যাবে। কিন্তু আমি উঁচু স্বরে কথা বলেছি এবং হেসেছি।’‌ এদিন গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন বনগাঁর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।

এছাড়া সভা শেষে করে বিশ্বজিৎ দাস হেলেঞ্চা বাজারে মিছিল করেন। পথচলতি মানুষ, দোকানদার সকলের সঙ্গে হাত মেলান। হেলেঞ্চা বাজারে থাকা হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদানও করেন। আর বিশ্বজিৎ দাসের কথায়, ‘‌বিধায়ক হিসেবে আজ ছিল আমার শেষ সভা। তাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। মানুষের ভালবাসায় চোখের জল আটকাতে পারিনি। আবার বাগদার মানুষ সুযোগ দিলে একইভাবে উন্নয়ন করব। অর্থের দিকে ঝুঁকলে মানুষ মুছে দেবেন। আমি তিন বারের বিধায়ক। দু’বার বনগাঁ থেকে জিতেছিলাম। বনগাঁর কিছু মানুষের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছিল। আমি মতানৈক্যের কারণে এখান থেকে দাঁড়িয়েছিলাম। আপনারা আশীর্বাদ করেছিলেন। তখন আমি অন্য কোনও প্রতীকে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু আমার অন্তরে ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি নতমস্তকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ।’‌