বিধায়ক–মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির বিলে সই রাজ্যপালের, এপ্রিল মাস থেকেই কার্যকর

২০২৩ সালে বিধানসভার বাদল অধিবেশনে সমস্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ওই বিলে সই করেননি। তাই এতদিন সেটা কার্য়কর হয়নি। অবশেষে আজ, শনিবার ওই বিলে স্বাক্ষর করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নতুন অর্থবর্ষ শুরুর আগেই বিলে সম্মতি দেওয়ায় এপ্রিল মাস থেকেই বর্ধিত বেতনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। হাতে আর বাকি ১৫ দিন। তারপরই মার্চ মাস শেষ। এই বিলে যে তিনি সাক্ষর করেছেন সেটা আবার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালেই নতুন হারে বেতন পাবেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়করা।

এদিকে আজ, শনিবার সকালে রাজভবন থেকে এক্স হ্যান্ডেলে বিষয়টি পোস্ট করে এই খবর জানানো হয়েছে। রাজভবন সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্যদের বেতন এবং ভাতা সংক্রান্ত দু’টি বিলে সম্মতি দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই দুটি বিল হল—পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্যদের বেতন (সংশোধন বিল) ২০২৩ এবং পশ্চিমবঙ্গ বেতন এবং ভাতা (সংশোধন) বিল ২০২৩। প্রথম বিলে বিধায়কদের বেতন এবং দ্বিতীয় বিলে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। অন্য রাজ্যের তুলনায় বাংলার মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন অনেক কম। তাই বেতন বৃদ্ধির দাবি ছিলই। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে দুর্গাপুজোর আগে ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে মুখ্যমন্ত্রী নিজের বেতন বৃদ্ধি করেননি। ভাতাও নেন না।

 

অন্যদিকে এই নিয়ে নানা কথা তুলেছিলেন অনেকে। তবে সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আমাদের রাজ্যের বিধায়কদের বেতন দেশের মধ্যে সব থেকে কম। তাই আমাদের সরকার বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাক্তন সাংসদ হিসাবে আমি পেনশন বাবদ এক লক্ষ টাকা পাই। বিধায়ক হিসাবে আমি বেতন পাই। কিন্তু নিই না। আমি আমার বই বিক্রির স্বত্ব বাবদ যা টাকা পাই, তাতেই আমার চলে যায়।’ এই বিল সেদিন থেকে রাজভবনে পড়ে ছিল। রাজ্যপাল তাতে সাক্ষর করছিলেন না। এটা নিয়ে রাজ্যপাল বনাম স্পিকারের মধ্যে টানাপোড়েন চলে। একে অন্যের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে থাকেন। অবশেষে সেই বিলে সই হল।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আমার অন্তরে ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’‌, অঝোরে কাঁদলেন প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস

এছাড়া এই বিলে অনুমোদনের জন্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু সেই বিলে সই করেননি রাজ্যপাল। অবশেষে দীর্ঘ ৭ মাস প্রতীক্ষার পর নতুন অর্থ বর্ষের মুখে বিলে সই করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বিধায়কদের বেতন ছিল বেড়ে হল ৫০ হাজার টাকা। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীরা এবার পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। আর রাজ্যের পূর্ণমন্ত্রীরা বেতন বাবদ এবার থেকে ৫১ হাজার টাকা পাবেন। ভাতা এবং কমিটির বৈঠকে যোগদান মিলিয়ে বিধায়কদের মোট প্রাপ্য হবে ১ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। বিরোধী দলনেতা এবং প্রতিমন্ত্রী, পূর্ণমন্ত্রীরা পাবেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।