পুরোহিত সংবর্ধনার ব্যবস্থা করল তৃণমূল কংগ্রেস, মঙ্গলকোটে তুমুল রাজনৈতিক তরজা

ইমাম ভাতা চালু করা হয়েছিল বলে বিরোধীরা সরব হয়েছিলেন। তারপর রাজ্য সরকার পুরোহিতদের জন্যও ভাতা ঘোষণা করেন। তখন বিরোধীরা পিছু হটে যায়। এখন দুয়ারে লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে এবার পুরোহিত সংবর্ধনার আয়োজন করল তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে বিরোধীরা নতুন করে ছক কষতে শুরু করেছেন। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ক্ষীরগ্রামের একটি কমিউনিটি হলে শতাধিক পুরোহিতকে নামাবলি এবং ফুল–মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এটাকে এখন বাঁকা চোখে দেখছেন বিরোধীরা। কদিন আগেই মঙ্গলকোটের ধারসোনায় মোয়াজ্জেম সংবর্ধনা দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোট টানতে তৃণমূল কংগ্রেসের এই কর্মসূচি। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, এটার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।

এদিকে মঙ্গলকোট ব্লকে প্রায় ৬৫ শতাংশ হিন্দু এবং ৩৫ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে এই ব্লক। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে ছিল। যদিও ভাল ভোট পেয়েছিল বিজেপি। তবে এই মোয়াজ্জেম এবং পুরোহিত সংবর্ধনা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেছেন, ‘এটার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। এই অনুষ্ঠান আমরা মাঝে মধ্যেই করে থাকি।’ বিরোধীরা এটাকে এখন ইস্যু বানাতে চাইছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। তবে এখানে লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন না। সুতরাং রাজনীতির প্রশ্ন নেই বলছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌শান্তনু একটা মদখোর গাঁজাখোর’‌, বিজেপি বিধায়কের অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস, অস্বস্তিতে দল

অন্যদিকে এই ইস্যু ছাড়তে নারাজ বিজেপি। তারা গেল গেল রব তুলেছে। এটা নিয়ে অনেক দূর জল গড়াতে চাইছে বিজেপি। আর তাই বিজেপির দাবি, মঙ্গলকোটের অনেকগুলি গ্রামে তাদের প্রভাব আগের থেকে বেড়েছে। তাই সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখা এবং হিন্দু ভোট ভাগ করার কৌশল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার জন্যই মোয়াজ্জেম ও পুরোহিতদের নিয়ে অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। এটা রাজনীতি করার জন্যই করা হয়েছে। এই বিষয়ে মঙ্গলকোটের বিজেপি নেতা রানাপ্রতাপ ঘোষ বলেছেন, ‘পুরোহিতদের কথা আগে তৃণমূলের মনে পড়েনি!‌’‌

বিজেপি যেই ফোঁস করে উঠেছে তখন একই সুর ধরেছে সিপিএমও। আসলে লোকসভা নির্বাচনে ফায়দা তুলতেই উদ্যোগী হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। এখানের সিপিএম নেতা শাজাহান চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ‘তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে ধর্মের রাজনীতির প্রতিযোগিতা চলছে। তাই এসব হচ্ছে। নির্বাচনে ফায়দা তুলতে চাইছে দু’‌দল।’ এই সব মন্তব্যকে সরাসরি খারিজ করে দিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমরা সব ধর্মকেই সম্মান করি। বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল তাই রাজনীতি করতে চাইছে।’