তৃণমূলের পাশে থাকবে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’, নিচ্ছে প্রচারের দায়িত্ব

সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রচার নয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে আলাদা করে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’। এই সংগঠনের প্রধান বংশীবদন বর্মণ জানান, এখন থেকেই ছোট ছোট সভা করতে শুরু করেছেন গ্রেটার সমর্থকরা। এমন কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতেই এভাবে প্রচার করবেন তাঁরা। বড় প্রচার করলে ডাকা হবে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে। আর ডাক পেলে সভায় যোগ দেবেন প্রার্থী। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘যে কোনও সংগঠন নিজেদের মতো করে প্রচার করতেই পারে।’‌

এদিকে গ্রেটার কোচবিহারের দু’টি সংগঠন আছে কোচবিহারে। একটি সংগঠনের শীর্ষে রয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের হয়ে প্রচার করবেন সেটাই স্বাভাবিক। ইদানিং বিজেপির কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি নন অনন্ত মহারাজ। তাই তাঁকে এখনও দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে নামতে দেখা যায়নি। এই অবস্থায় তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত বংশীবদন বর্মণ সভা, সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছেন। বংশীবদন বর্মণ এই নিয়ে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের রাজবংশী সমাজের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাই আমরা তাঁর সঙ্গে রয়েছি। আর আমরা আলাদা করে প্রচার করব।’

আরও পড়ুন:‌ সামাজিক ব্যাধির পাল্টা নৈতিক দায়, গার্ডেনরিচ কাণ্ডে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত ফিরহাদ–অতীন

অন্যদিকে বংশীবদন বর্মণের নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনকে নিয়ে গ্রেটারের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার হয়ে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রেটার। এই কথা জানতে পেরে চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। কারণ রাজবংশী সমাজের ভোট তৃণমূল কংগ্রেস পেলে বিজেপির এখানে জেতা কঠিন। ইতিমধ্যেই প্রচারও শুরু করা হয়েছে। বংশীবদন রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি এবং রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বে আছেন। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি, উন্নয়ন পর্ষদ, রাজবংশী ভাষার স্কুল এবং রাজ্য পুলিশে নারায়ণী ব্যাটালিয়ন, চিলা রায়ের মূর্তি তৈরির প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। তাই এবারও তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

এছাড়া বিজেপি এখানে যখন ভাল ফল করেছিল তখন রাজবংশীদের জন্য কোনও কাজ করেনি বলে অভিযোগ। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস কথা দিয়ে কথা রেখেছে। এটাই আকর্ষণ করেছে গ্রেটারকে। নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূরণ হতেই তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রেটার। লোকসভা নির্বাচনে লাগাতার প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছে তারা। একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা গিয়েছে বংশীবদন বর্মণকে। এবার নিজেদের সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখাতেই আলাদা প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রেটার। এমনকী নিজেদের কবজির জোর দেখাতে একটি বড় সভার আয়োজন করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়াকে আমন্ত্রণ করা হবে।