দিনহাটায় যাচ্ছেন রাজ্যপাল, বনধের মধ্যে বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন মন্ত্রী উদয়ন গুহ

লোকসভা নির্বাচনের প্রচার করতে নেমে মঙ্গলবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের দিনহাটা। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহর মুখোমুখি সংঘর্ষ উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এসে মাথা ফাটে এসডিপিও’‌র। এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্য পুলিশের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের কাছে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি। আজ, বুধবার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে দিনহাটা যাচ্ছেন রাজ্যপাল। আর তখনই বড় চ্যালেঞ্জ করে বসলেন রাজ্যর উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ।

এদিকে নিশীথ–সহ বিজেপির ৪৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর উদয়ন গুহ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছেন, রাজ্যপাল খোঁজখবর করে যদি গণ্ডগোলের ঘটনায় তাঁর হাত আছে বলে দেখতে পান, তাহলে তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন। আবার গতকালের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে উদয়ন গুহকে কটাক্ষ করে এক বিজেপি নেতার ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। ওই বিজেপি নেতা লিখেছেন, ‘জন্মদিনের উপহার কেমন লাগল?’ অর্থাৎ বিজেপিই যে এই গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটিয়ে ছিল সেটা এই ফেসবুক পোস্ট থেকে প্রমাণিত। পরিকল্পিতভাবে ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে বুধবার সকালে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সামনে আরও একবার সমস্ত ঘটনার জন্যই বিজেপিকে দায়ী করলেন মন্ত্রী উদয়ন গুহ।

আরও পড়ুন:‌ বঙ্গ–বিজেপির প্রার্থী তালিকা কবে প্রকাশ পাবে?‌ জানিয়ে দিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত

অন্যদিকে গতকাল রাতে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে উদয়ন গুহ এবং নিশিথ প্রামাণিকের মধ্যে। দুই গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। আহত হন দিনহাটা থানার এসডিপিও–সহ বিজেপি জেলা সভাপতি সুকুমার রায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাতেই বিজেপির পক্ষ থেকে পথ অবরোধ করা হয়। এই ঘটনারই প্রতিবাদে আজ দিনহাটা জুড়ে ২৪ ঘন্টার বনধ ডাকা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। লোকসভা নির্বাচনে গ্রাউন্ড জিরো থেকে মনিটরিং করবেন বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। ঝামেলার পরিস্থিতি তৈরি হলে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবেন আনন্দ বোস বলে বার্তা এসেছিল রাজভবনের তরফে। এখন নির্বাচন শুরুর আগে অভিযোগ শুনতে বিশেষ সেলও খুলেছেন রাজ্যপাল।

এছাড়া দিনহাটা মহকুমার পুলিশ অফিসার ধীমান মিত্র আহত হয়েছেন। জখম হন একাধিক ব্যক্তি। দু’‌পক্ষের সংঘর্ষে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হিমশিম খায় পুলিশ। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ প্রশাসনকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। এদিন বৃষ্টিতে ভেজা দিনহাটায় সকাল থেকেই শুনশান রয়েছে রাস্তাঘাট। বন্ধ আছে দোকানপাট। হাতেগোনা মানুষজন রাস্তায় বেরিয়েছেন। যানবাহন প্রায় চলছে না বলা যায়। এই বিষয়ে উদয়ন গুহ বলেন, ‘হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আমরা বন্‌ধ ডেকেছি। আমরা বন্‌ধ সমর্থন করি না। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় প্রতিবাদ হিসাবে এই বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। মানুষ দারুণভাবে সাড়া দিয়েছেন।’‌