Gardenreach resque work: আর খোঁড়া যাচ্ছে না, গার্ডেনরিচে ৫৭ ঘণ্টা পর বন্ধ হল উদ্ধারকাজ, ক্ষুব্ধ পরিবার

গার্ডেনরিচের আজহার মোল্লা বাগানে ভেঙে পড়া বেআইনি বহুতলের ধ্বংসস্তূপের নিচে আর কোনও জীবিত বা মৃত ব্যক্তির খোঁজ মেলেনি। এই অবস্থায় টানা ৫৭ ঘণ্টা ধরে উদ্ধারকাজ চালানোর পর আপাতত তা বন্ধ করে দেওয়া হল। যদিও প্রতিবেশীদের দাবি, এলাকার বাসিন্দা শেরু নিজামি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়াও আরও দুই রাজমিস্ত্রি নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। তবে উদ্ধারকারী দলের বক্তব্য, তারা যতটা সম্ভব চেষ্টা চালিয়েছেন। আর খনন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই উদ্ধারকাজ বন্ধ করা হল। বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধারকার্য শেষ করে একথা জানায় উদ্ধারকারী দল। 

আরও পড়ুনঃ গার্ডেনরিচের জের, ৩ ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ, তালিকা করে বেআইনি বাড়ি ভাঙার নির্দেশ

রবিবার রাতে ওই বহুতল ভেঙে পড়ার পরই উদ্ধারকাজ শুরু করে দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনডিআরএফ, কলকাতা পুলিশের ডিএমজি ও রাজ‌্য সরকারের সিভিল ডিফেন্স। এনডিআরএফের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, গত তিন দিন ধরে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে। একেবারে নিচুতলা পর্যন্ত পুরো পথ খোঁড়া হয়েছে। কিন্তু, আর কোনও মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, এলাকার অন্তত একজন বাসিন্দা এখনও নিখোঁজ। সেক্ষেত্রে ধ্বংসস্তূপ কলকাতার পুরসভার তরফে সরিয়ে ফেলার পরেই তা বোঝা যাবে। এই কাজ কলকাতা পুরসভার কাছে হস্তান্তর করেছে উদ্ধারকারী দল। 

ডিএমজি কর্মকর্তা জানান, ধ্বংসাবশেষের নিচে কেউ জীবিত বা মৃত অবস্থায় চাপা পড়ে রয়েছে কি না তা জানার জন্য সিঁড়ির উপরে কংক্রিটের স্ল্যাবগুলিতে একাধিক গর্ত করা হয়। এরপর ভিকটিম লোকেটিং ক্যামেরা (ভিএলসি) ঢুকিয়ে খতিয়ে দেখা হয়েছে। পাশাপাশি লাইফ ডিটেক্ট ডিভাইস (এলডিডি) ব্যবহার করা। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে উদ্ধার কাজ শেষ করায় ক্ষুব্ধ শেরুর পরিবার। তাদের প্রশ্ন, এখনও দেহ উদ্ধার হল না। তাসত্ত্বেও কীভাবে উদ্ধারকাজ বন্ধ করা হল? পরিবারের এক সদস্য জানান, শেরুর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। তবে তাদের আর্জি, পুরসভা যাতে দ্রুত ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে দেহ উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, ৪ মেয়ে ও ১ ছেলের বাবা শেরু স্থানীয় একটি কারখানায় সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর অধীনে অনেক স্থানীয় যুবক কাজ করতেন। তিনি প্রতি রাতে নির্মীয়মাণ ওই বহুতলে যেতেন এবং সেখানে  বন্ধুদের সাথে সঙ্গে দিতেন। রবিবার রাতেও তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।

পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, এই দুর্ঘটনার পরেই তারা শেরুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি আরও কয়েকজনের সঙ্গে ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে পড়েছেন। তিনি বারবার বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তবে কিছুক্ষণ পরে তাঁর ফোনটি বন্ধ হয়ে হয়ে গেলে আর যোগাযোগ করা যায়নি। 

এদিকে, উদ্ধারকারী দল কাজ বন্ধ করার পরেই সেখানে কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। সেখানে বসিয়ে ধ্বংসাবশেষ সরানোর জন্য যন্ত্রপাতি এবং মিনি ট্রাক নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সতর্কতার সঙ্গে কাজ হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভার এক আধিকারিক।