রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ, বোসের বিরুদ্ধে ফোঁস করল তৃণমূল

এবার সরাসরি জাতীয় নির্বাচন কমিশনে চিঠি লিখে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকল তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। সেখানে রাজ্যপাল এই লোকসভা নির্বাচনে পৃথক অফিস চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এতদিন পর সরাসরি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠোকায় সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতেই নানা ইস্যুতে রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকার বিরোধ লেগেই থাকে। সেখানে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত নালিশ জমা পড়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।

এদিকে এই চিঠিতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পৃথক পোর্টাল খোলা নিয়ে নালিশ ঠোকা হয়েছে। একইসঙ্গে রাজ্যপালের এক্স হ্যান্ডেলে তা রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। মানুষের সঙ্গে তথাকথিত ‘‌সরাসরি যোগাযোগ’‌ রাখতেই এই পোর্টাল খোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। এমনকী সেই পোর্টালের নাম ‘‌লোগ সভা’‌ রাখা হয়েছে ‘‌লোকসভা’‌ নামের সঙ্গে মিলিয়ে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ও পিস রুম খোলা হয়েছিল। এই সংক্রান্ত যাবতীয় স্ক্রিনশট, টুইট, সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট চিঠির সঙ্গে জমা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের অফিসে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত হয়নি’‌, মন্তব্য প্রাক্তন বিচারপতির

অন্যদিকে নির্বাচনের সময় ঘুরে বেড়াবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যেখানে নির্বাচন কমিশন আছে সেখানে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের দরকার কী?‌ এই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তরবঙ্গের দিনহাটায় চলে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে বিজেপি বিধায়ক বরেণ চন্দ্র বর্মণের সঙ্গে দেখা করেন। সুতরাং রাজ্যপাল পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে নির্বাচন কমিশনের সব ধরণের ক্ষমতা রয়েছে সেখানে রাজ্যপাল এভাবে নাক গলাতে পারে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে চিঠিতে। এমনকী নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সম্পর্কেও ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে।

এছাড়া চারটি আর্জি জানানো হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের এই চিঠিতে। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। তাই এখন সব কিছু আদর্শ আচরণবিধির মধ্যে পড়বে। এই কারণে নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং ভোট চলাকালীন—এক, পৃথক নির্বাচনী অফিস খোলা থেকে রাজ্যপালকে বিরত করতে হবে। একইসঙ্গে নতুন পোর্টাল খোলা থামাতে হবে। দুই, রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করা থেকে রাজ্যপালকে বিরত করতে হবে। তিন, রাজ্য সরকারের কোনও পদক্ষেপের বা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে গিয়ে টুইট বা সাংবাদিক সম্মেলন করা থেকে বিরত করতে হবে রাজ্যপালকে। আর চার, এগুলি ছাড়া আর যদি কোনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে নির্বাচন কমিশন তা নিতে পারে।