Viral News: শাস্ত্র কি মেয়েদের পৈতে মেনে নেয়? কন্যার পৈতে দিয়ে সমাজের রোষে বাবা-মা

মা বলেছেন, কৈরভীর দ্বিতীয় জন্ম হবে। সত্যিই তাই। হলুদ শাড়ি পরে পৈতে হল বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির মেয়ের।

‘এমনটা করা যাবে না। সমাজ কি বলবে!’- এই বহু প্রচলিত লাইনে এবার দাঁড়ি বসিয়েছেন বীরভূমের এক বাবা-মা। মেয়ে সন্তানের পৈতে দিয়ে সমাজের স্টারিওটাইপ ভাঙতে চেয়েছেন তাঁরা। মেয়ের আবার পৈতে! সম্ভব নাকি! উঠছে প্রশ্ন। মিলছে হাজারও উত্তরও। খবরটা জেনে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মহিলা দাবি জানিয়েছেন যে শাস্ত্র নাকি মেয়েদের পৈতের বিষয়ে সম্মতি দেয়। ওই মহিলার কথায়, ‘উপনয়ন সমাজের জন্য ভালো না খারাপ, সেটা আলোচনা সাপেক্ষ। তবে শাস্ত্রে, নারীদেরও উপনয়নের বিধান এবং উদাহরণ দুইই আছে। যজ্ঞোপবীত বা নবগুণ ধারণের বিশেষ উদাহরণ, কুন্তী(মহাভারত), অপালা, গার্গী, বাক প্রভৃতি নারী।’

আজকের শিক্ষিত সমাজ, নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা তোলে। এই কথায় এবার শান দিয়ে সাম্যবাদের বার্তা তুলে ধরেছেন বীরভূম জেলার সিউড়ির বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার। পুত্র সন্তানের যদি পৈতে হতে পারে, তাহলে কন্যা সন্তানের কি দোষ? তাই বাবা মা বৈদিক যুগের রীতিনীতি মেনে বুধবার পৈতে দিয়েছেন তাঁদের কন্যা কৈরভীকে। আর পাঁচটা পৈতে বাড়ির মতো একেবারেই একই জাঁকজমকপূর্ণভাবে, সিউড়ির রামকৃষ্ণপল্লীর বাস ভবনে মেয়েকে হলুদ শাড়ি, ফুলের মালায় সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে পৈতে। কার্ড ছাপিয়ে সবাইকে নিমন্ত্রণও করা হয়েছিল।

  • শাস্ত্র কি সত্যিই মেয়েদের পৈতে মেনে নেয়!

উল্লেখ্য, বৈদিক যুগেও নাকি এই রকম রীতির প্রচলন ছিল। সেই রীতি মেনে এর আগেও বাংলায় পৈতে হয়েছে মেয়েদের। কৈরভী জানিয়েছেন, কৈরভী মেয়ে হওয়ার তার অন্নপ্রাশনের সময় পুরোহিত বলেছিলেন, যজ্ঞ হবে না। তাই মেয়ের বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের পৈতে নিয়ে একটু খোঁজখবর করে বাবা জানতে পারেন যে মেয়েদেরও পৈতে হতে পারে। এ প্রসঙ্গে, কৈরভীর মা ডা. কৌশানী চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, অনেক বই পড়ে, সব বাধা পেরিয়ে, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজ সাম্যবাদের বার্তা দিতে এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন সিউরির বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার।

  • মেয়েদের অধিকারের প্রশ্ন

যদিও এ খবর চাউর হতে, অনেকেই সমাজের স্টিরিওটাইপ ভেঙে নতুন কিছু করতে যাওয়ার বিষয়টিকে ভালো চোখে নিতে পারেননি। একজন তো লিখেই বসেছেন যে, ‘এখন সমাজে অদ্ভুত একটা রোগ দেখা দিয়েছে সেটা হল নারী পুরুষ সমান এই করতে গিয়ে সমাজের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নারী পুরুষ সমান বা অসমান এটা তর্কের বিষয় তবে আমি মনে করি নারী পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। সস্তার পাবলিসিটি পাওয়ার জন্য মানুষ আর কী কী করবে কে জানে।’ কেউ কেউ আবার উপনয়নের অধিকার নিয়েও কথা তুলেছেন। একজন নেটিজেনের দাবি, ‘পৈতা হল উপনয়ন!! উপনয়ন হল পড়াশোনার জন্য আচার্যসমীপে বা বিদ্যালয়ে গমন!! ঋষিরা হচ্ছেন গোত্র প্রবর্তক সত্যদ্রষ্টা মুনি!! যাঁদেরই গোত্র আছে তাঁরা সবাই সত্যদ্রষ্টা ঋষিদের বংশধর!! শিক্ষা সত্যের দুয়ার খুলে দেয়!! সত্যের দুয়ার খুলে গেলে কুসংস্কার ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হয়!! তাই কুসংস্কার ব্যবসায়ীরা চান না সকলে শিক্ষা পাক আর সত্যের দুয়ার খুলে যাক!! ঋষিদের বংশধর-সহ সকলেরই শিক্ষার অধিকার আছে , উপনয়নের অধিকার আছে!!’