গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা পরখ করলেন দেব, কেশপুরের ভূমিপুত্রের কাছে লড়াই কি কঠিন?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী থাকার সময় বলেছিলেন, কেশপুর হবে সিপিএমের শেষপুর। তারপর সেই কথা সত্যি হয়েছিল। আর সিপিএম ফেরেনি। কেশপুরে সংগঠন এখন নেই বললেই চলে। এবার সেই কেশপুরেই প্রচার করতে এলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব। এবার ঐক্যবদ্ধ কেশপুর থেকে লিড চায় তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে। তবে কেশপুরে তৃণমূল কংগ্রেস ঐক্যবদ্ধ নয়। সেটা পা রেখেই টের পেয়েছেন দেব। তাই তিনি বার্তা দিয়েছেন ঐক্যবদ্ধ হতে। আর কর্মীদের নিয়ে করা বৈঠকে দেব বলেছেন, ‘লবি করছেন কেন? একতা যদি না থাকে তা হলে কী করে চলবে?’ সূত্রের খবর তেমনই।

এদিকে এখন সিপিএমের ভোট বিজেপিতে ট্রান্সফার হয়। সেটা বারবার দেখা গিয়েছে। তাই একতা না থাকলে বা দল ঐক্যবদ্ধ না থাকলে ভোটবাক্সে প্রভাব পড়তে পারে। এটা বিলক্ষণ বোঝেন দেব। তাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার কেশপুরে আসেন দেব। ‘রোড শো’ এবং কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই তৃণমূল প্রার্থীর মন্তব্য, ‘আপনারা কঠিন নন, আপনারা খুব সহজ। একদম জলের মতো। কিন্তু যাঁরা পদ পেয়ে আছেন তাঁরা প্রচণ্ড কঠিন হয়ে আছেন। একটা নির্বাচন কমিটি করতে এত কষ্ট হচ্ছে?এই ছোট একটা বিধানসভায়। এখানে আপনাদের মধ্যে মতপার্থক্য এত হচ্ছে কেন?’

আরও পড়ুন:‌ নিশীথ প্রামাণিকে বিরুদ্ধে আছে একাধিক মামলা, ভোট প্রচারে ‘‌অস্ত্র’ করছে‌ তৃণমূল

অন্যদিকে দেবের এই কথা অনেকে মাথা নীচু করে থাকলেও বিশেষ কোনও উত্তর দেননি তাঁরা। সুতরাং দেবের দাবি যে ঠিক সেটা এই ঘটনা থেকে পরিষ্কার। এখানের মন্ত্রী তথা বিধায়ক শিউলি সাহা ও ব্লক সভাপতি প্রদ্যোত পাঁজার মধ্যে বিস্তর দ্বন্দ্ব আছে বলে সূত্রের খবর। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে রোড–শো থেকেই দু’পক্ষের মারামারি হাতজোড় করে সামাল দেন দেব। আর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে খুব ভিড় ছিল। সবাই দেবের গাড়ির সামনে থাকতে চায়। দেবের সঙ্গে থাকতে চায়। অথচ জায়গা কম। ১০ জনের জায়গায় ৫০ জন ঢুকে পড়লে তো সমস্যা হবেই। যদিও ওটা না হলেই ভাল হতো। তবে দু’‌মিনিটে মিটেও গিয়েছে।’

এছাড়া কেশপুর ছাড়া সর্বত্র দেবের প্রচার জমজমাট হয়েছে। কেশপুরেও ভিড় কম হয়নি। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা দেখতে পেয়েছেন দেব। যা অন্যান্য বিধানসভা এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়নি। কেশপুরে তা দেখে কর্মীসভায় দেব বলেন, ‘অতীতটা ভাল নয় কেশপুরের। কিন্তু তা বলে বর্তমানটা ভাল হতে পারে না, ভবিষ্যৎটা ভাল হতে পারে না। পরের প্রজন্ম কি মারপিট করবে? আমার পৈতে হয়েছিল কেশপুরের মহিষদা গ্রামে জেঠুর বাড়িতে। তিন দিন সন্ন্যাসী হয়ে ছিলাম। শুধু বোমার আওয়াজ শুনেছি। এখন তা হয় না। আমার অনুরোধ, নিজেদের মধ্যে লড়াই বন্ধ করুন।’