সল্টলেক–নিউটাউনে বহু বাড়ি হেলে আছে, গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর বাড়ছে আতঙ্ক

গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে পড়েছে। তার জেরে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে এখনও উত্তাল রাজ্য–রাজনীতি। পৃথক তদন্ত কমিটিতে গড়ে তোলা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। এমন আবহে এবার আতঙ্ক ছড়িয়েছে নিউ টাউনে। এই এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি হেলে পড়েছে। সেখানে মানুষ এতদিন দিব্যি বসবাস করছিল। কিন্তু গার্ডেনরিচের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে দেখার পর থেকে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। যদি হেলে যাওয়া বাড়ি ধসে যায়!‌ তাহলে কী হবে?‌ এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নিউটাউনের বাসিন্দাদের মনে।

এদিকে যে বাড়িগুলি নিউটাউনে হেলে গিয়েছে সেগুলির বয়সও অনেক হয়েছে। তাই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এখানকার নানা ব্লকে হেলে পড়েছে চার–পাঁচতলা আবাসিক বাড়ি। লোকজন বসবাস করলেও এখন তাঁদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। গার্ডেনরিচের ঘটনা এখানে ঘটবে না তো?‌ এই প্রশ্ন মনে এসেছে অনেকের। তবে ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ দাবি করেছে, ওই সব বাড়ি হেলে থাকলেও গার্ডেনরিচের মতো বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা কম। হঠাৎ করে ভেঙে পড়ে যাবে না। বিরাট কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিতে তখন কিছু ঘটতে পারে। আপাতত আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। এটা শোনার পর অনেকে আশ্বস্ত হয়েছেন।

আরও পড়ুন:‌ কলকাতা হাইকোর্টে পুলিশ–পুরসভার তরজা চরমে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ বিচারপতির

অন্যদিকে একসময় সল্টলেক জলাজমি ছিল। নগরায়ন করতে গিয়েই সেসব এখন অতীত। সল্টলেক, রাজাহাট, নিউটাউনে এখন পেল্লাই সাইজের বহুতল গড়ে উঠছে। তাতে মাটির উপর চাপ বাড়ছে বলে অনেকের মত। সেখানে বাড়ি হেলে থাকলে একটা আশঙ্কা তো হয়। ওই সব বাড়িগুলি জি+‌৪। অর্থাৎ গ্যারাজ–সহ চারতলা। নিউ টাউনের সিএ, সিডি কিংবা ডিবি ব্লকগুলিতে এমন আবাসিক বাড়ি আছে। সেগুলি যে সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বাড়ি তৈরি করার শুরুতে পাইলিং কিংবা কাঠামো তৈরিতে ত্রুটি ছিল বলেই ওই সব নির্মাণ হেলে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া এখানে শুধু স্থানীয় বাসিন্দারা থাকেন তা নয়। চাকরি করতে এসে এখানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছেন এমন সংখ্যাও খুব কম নয়। এখানের মাটি দুর্বল হওয়ার কারণে ভিত খোঁড়া অথবা মাটি ভরাটের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলে বাড়ি হেলে পড়তে পারে। সে কারণে এমন হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। এই বিষয়ে এনকেডিএ’‌র অফিসাররা জানান, এখানের আবাসনে বসবাস করার জন্য এনকেডিএ’‌র ছাড়পত্র দরকার হয়। সেটা পাওয়া গেলে থাকা যায়। তবে তার আগে নির্দিষ্ট বাড়িটিকে যাদবপুর, আইআইটি বা শিবপুর আইআইইএসটি’‌র পক্ষ থেকে দেওয়া ‘ফিট’ শংসাপত্র আবাসিকরা দেখেন। তাই বাড়িগুলি নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ দেখছে না এনকেডিএ।