১৩ বছর ধরে চলেছে গার্হস্থ্য হিংসা! অভিযোগ স্ত্রীর, মামলায় স্বামীকে ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ কোর্টের

দাম্পত্যে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনায় মামলা উঠেছিল ট্রায়াল কোর্ট। সেই ট্রায়াল কোর্টের রায়কে বহাল রেখে রায় দিল বম্বো হাইকোর্ট। এই মামলায় হাইকোর্ট গার্হস্থ্য হিংসার মামলায় এক ব্যক্তিকে ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই ক্ষতিপূরণ তাঁকে দিতে হবে তাঁর স্ত্রীকে। এছাড়াও প্রতি মাসে স্ত্রীকে ভরণপোষণের জন্য আরও ১.৫ লাখ টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। 

এই গার্হস্থ্য হিংসা সম্পর্কীয় মামলার রায় দিতে গিয়ে, কোর্ট বলছে, এই সংক্রান্ত মামলায় সব ক্ষেত্রেই একই ‘ফর্মুলা’ কার্যকরী হবে না। প্রতিটি মামলার ধরণ অনুযায়ী এই অঙ্ক স্থির হবে। কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘ আমার দৃষ্টিতে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করার সময়, যে কারণগুলি বিবেচনা করা যেতে পারে তা হল ক্ষুব্ধ মানুষটির উপর পারিবারিক সহিংসতার প্রভাব।’ উল্লেখ্য, পারিবারিক হিংসার শিকার ওই মহিলার উপর শারীরিক অত্যাচার ছাড়াও যে মানসিক অত্যাচার হয়েছে, আবেগতভাবে তিনি যে ধাক্কা খেয়েছেন, তা নজরে এনেছে কোর্ট। বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি শর্মিলা দেশমুখ মামলায় বিভিন্ন দিক নজরে এনে, মামলায় অভিযুক্ত স্বামীকে ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে। বম্বে হাইকর্ট এই নির্দেশ দেওয়ার আগে ট্রায়াল কোর্টের রায় পর্যবেক্ষণ করেছে। সেখানে দেখতে পেয়েছে যে, ১৯৯৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ‘টানা ১৩ বছর ওই অভিযোগকারী মহিলা পারিবারিক হিংসার শিকার হয়েছেন ক্রমাগত। বারবার এই ঘটনা যে ভুলবশত হয়নি, তাও নজরে এনেছে কোর্ট। 

উল্লেখ্য, এই গার্হস্থ্য হিংসার মামলায় দেখা যাচ্ছে, ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছে ১৯৯৪ সাল। বিয়ের অনুষ্ঠানের পরই ওই দম্পতি আমেরিকায় চলে যায়। আমেরিকায় তাঁদের আরও একটি বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এরপর তাঁরা মুম্বইতে ফিরে আসে। একসঙ্গে যৌথ মালিকানাভূক্ত বাড়িতে তাঁরা থাকতে শুরু করেন। এরপর ২০০৮ সালে ওই মহিলা তাঁর মায়ের কাছে থাতে শুরু করেন। পরে ২০১৪ সালে ফের আমেরিকা ফিরে যান ব্যক্তি। ২০১৭ সালের জুলাইতে, মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে একটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গার্হস্থ্য সহিংসতা আইনের (ডিভিএ) বিধানের অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ ছিল, হানিমুনের সময় স্ত্রীকে ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ বলে কটাক্ষ করেন স্বামী। কারণ বিয়ের আগে তাঁর আরও একটি বাগদান হয়েছিল, যা ভেঙে যায়। তিনি অভিযোগ তোলেন যে, তাঁকে আমেরিকায় থাকাকালীন নিরন্তর মারধর করতেন তাঁর স্বামী। এরপর থেকেই চলে মামলা।