দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে কিছুদিন আগে মুখ খুলেছিল জার্মানি। তারপরই, ভারতে অবস্থিত জার্মানির দূতাবাসের আধিকারিককে তলব করে দিল্লি জানিয়েছিল, বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। এরপর আমেরিকা কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে সদ্য মুখ খুলেছে। বাইডেন প্রশাসনের বক্তব্য কেজরিওয়ালকে নিয়ে আসার পরই এবার ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ গ্লোরিয়া বারবানাকে ডেকে পাঠাল ভারতের বিদেশমন্ত্রক।
ওয়াশিংটনের প্রতি বার্তায় দিল্লি সাফ জানাচ্ছে, ‘কূটনীতিতে রাষ্ট্রগুলি অন্যের সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে, এমনটাই আশা করা যায়। এই দায়িত্ব সহকর্মী গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে আরও বেশি, নয়তো অস্বাস্থ্যকর নজির স্থাপন করতে পারে।’ এমনই বিবৃতি ভারতের তরফে জারি করা হয়েছে। এর আগে মার্কিন দূতাবাসের আধিকারিককে তলব করে এস জয়শঙ্করের বিদেশমন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ভারতের আইনের প্রক্রিয়া একটি স্বতন্ত্র বিচারব্যবস্থার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,‘যা বস্তুনিষ্ঠ ও সময়মতো ফল প্রকাশ করে।’ দিল্লির সাফ দাবি, এই ইস্যুতে খোঁচা, একেবারে অযৌক্তিক।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার আমেরিকার তরফে আসা এক মন্তব্য ঘিরে। সেখানে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের তরফে বলা হয়েছে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির রিপোর্টের দিকে আরও নজর কড়া করছে আমেরিকা। উল্লেখ্য, এর আগে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ২০২১-২২ সালের বিতর্কিত আবগারি নীতি নিয়ে তদন্তের জেরে এই গ্রেফতারি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারির পরই জার্মানি থেকে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তারপরই মোদী সরকারের বিদেশমন্ত্রকের তরফে তলব করা হয়েছিল জার্মানির দূতাবাসের আধিকারিককে। এর কিছুদিন পরই আমেরিকার দূতাবাসের আধিকারিককে ডেকে পাঠাল দিল্লি। এর আগে, আমেরিকাও কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে নজর রাখার কথা বলেছে। মার্কিন মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘ আমরা মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের জন্য একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং সময়োপযোগী আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি।’ এরপরই ওয়াশিংটনের প্রতি কার্যত প্রচ্ছন্ন বার্তা দিয়ে মার্কিন আধিকারিককে ডেকে পাঠায় দিল্লি।
গ্লোরিয়া বারবানার আগে জার্মানির দূতাবাসের ডেপুটি চিফ জর্জ এনজুয়েলারকে ডেকে পাঠিয়েছিল ভারতীয় দূতাবাস। দিল্লি তাঁকে সাফ জানিয়েছে, জার্মানির মন্তব্যকে ভারতের বিচারব্যবস্থায় নাক গলানোর শামিল মনে করা হচ্ছে। ফলে সেই জায়গা থেকে যেন জার্মানি বিরত থাকে, সেই বার্তা জার্মানিকে দিয়েছে ভারত। ভারতের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, জার্মানির মন্তব্য ‘আমাদের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা এবং আমাদের বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করা’র শামিল। এছাড়াও বার্লিনের প্রতি বার্তায় দিল্লি জানিয়েছিল, ‘এই প্রেক্ষাপটে করা পক্ষপাতমূলক অনুমানগুলি সবচেয়ে অযৌক্তিক।’