USA on Kejriwal Arrest: কেজরিকাণ্ডে আমেরিকা মুখ খোলায় তলব কূটনীতিককে, এরপরই দিল্লিকে নয়া বার্তা ওয়াশিংটনের

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর সেই ইস্যুতে মুখ খুলেছিল আমেরিকা। গত বুধবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, ‘আমেরিকা চায় যাতে স্বচ্ছ ভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।’ এরপরই দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিককে তলব করে পাঠানো হয়েছিল ভারতের বিদেশ দফতরের থেকে। এবার সেই তলবের পর ফের একবার মুখ খুলল ওয়াশিংটন। কেজরিকাণ্ডে গতকাল ম্যাথিউ মিলার ফের একবার বললেন, ‘এই গোটা ইস্যুর ওপর নজর রেখে চলেছে আমেরিকা।’ এদিকে তিনি এও বুঝিয়ে দেন, দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়টিও তাদের নজরে আছে।

তবে দিল্লিতে মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূতকে কী বলা হয়েছে, এই প্রশ্নের কোনও স্পষ্ট জবাব ম্যাথিউ মিলার দেননি। তিনি বলেন, ‘কূটনীতিকদের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা আমি জনসমক্ষে বলব না। তবে আমরা এই বক্তব্যের ওপরই ফের একবার জোর দেব, সুষ্ট, অবাধ এবং স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার পক্ষে আমেরিকা। আমার মনে হয়, কেউই সেই বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করবে না। আমরা ব্যক্তিগত ভাবে আলোচনা করার সময়ও এই একই কথা তুলে ধরব।’

প্রসঙ্গত, কেজরিওয়াল নিয়ে ওয়াশিংটন মুখ খোলার পরই গতকাল মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূত গ্লরিয়া বার্বেনাকে দিল্লির সাউথ ব্লকে বিদেশ মন্ত্রকে তলব করা হয়েছিল। এদিকে শুধু কেজরির গ্রেফতারি নয়, কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হওয়ার বিষয়েও গতকাল মুখ খোলেন মার্কিন আধিকারিক। এই বিষয়ে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে আয়কর দফতরের তরফ থেকে তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এর জেরে তাদের নির্বাচনে লড়াই করা কঠিন হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত। আমরা এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই চাইছি যাতে সুষ্ট, অবাধ এবং স্বচ্ছ ভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক।’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে কেজরিওয়ালের দিল্লি সরকার মদ বিক্রির নয়া নীতি কার্যকর করেছিল। তবে কয়েকদিন পরই সেই নীতি বাতিল করা হয়েছিল। এরই মাঝে অভিযোগ ওঠে, সেই নীতির অধীনে নির্দিষ্ট কিছু মদ ব্যবায়ীর থেকে ঘুষ নিয়ে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। মদ বেচার লাইসেন্সের জন্য ডিলাররা ১০০ কোটি টাকার ঘুষ দিয়েছিল আম আদমি পার্টিকে। এদিকে এই গোটা ঘটনায় তেলাঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে কবিতার সরাসরি যোগ ছিল বলে দাবি। ইডি অভিযোগ করেছে, কবিতার মদতে দক্ষিণ ভারতে অনেক সংস্থা আপ-কে ঘুষ দিয়ে দিল্লিতে মদ বিক্রির লাইসেন্স পেয়েছিল। আর এই গোটা লেনদেনের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বর্তমান রাজসাক্ষী রেড্ডি।

এই আবহে দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় আম আদমি পার্টিকে ‘কোম্পানি’ আখ্যা দিয়েছিল ইডি। শুধু তাই নয়, দাবি করা হয়েছিল, এই গোটা দুর্নীতির মাথা নাকি অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজেই। এদিকে এই মামলায় এখন রাজসাক্ষী হয়েছেন এক অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নিজেই। জানা গিয়েছে, আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত পি শরৎচন্দ্র রেড্ডিকে এই মামলায় কেজরির বিরুদ্ধে সাক্ষী করেছে ইডি। উল্লেখ্য, এর আগে আবগারি দুর্নীতি মামলায় রেড্ডিকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন তিনি। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, রেড্ডি অরবিন্দ ফার্মা নামক ওষুধ সংস্থার ডিরেক্টর। রেড্ডির গ্রেফতারির পর সেই সংস্থাই পাঁচ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছিল। এসবিআই-এর ইউনিক নম্বর প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, সেই বন্ড নাকি বিজেপির খাতাতে জমা পড়েছিল। পরে এই রেড্ডি জামিনের আবেদন করলে ইডি তার বিরোধিতা করেনি বলে দাবি। আরও দাবি করা হচ্ছে, রেড্ডি জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর আরও ২৫ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল অরবিন্দ ফার্মা। সেই টাকাও গিয়েছিল বিজেপির পকেটেই।