মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সফরের সময় রেড কার্পেট বিছানোর প্রয়োজন নেই। লাগবে না বেতনও। আগে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হোক। তাই এবার বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তলানিতে ঠেকেছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা। মূল্যস্ফীতি চরমে, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শরিফ এদিন অফিশিয়াল অনুষ্ঠানে রেড কার্পেট নিষিদ্ধ করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এআরওয়াই নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গিয়েছে।
মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সফরের সময় রেড কার্পেট কালচার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শরিফ এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানা গিয়েছে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে রেড কার্পেট নিষিদ্ধকরণ ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক সংবর্ধনার জন্য রেড কার্পেট ব্যবহার করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা যৌথভাবে বেতন-ভাতা বর্জনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর আগে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি সারা দেশের সামনে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে নিজের বেতন ও ভাতা নিতেও অস্বীকার করেছিলেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, শনিবার দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি সরকারি গণমাধ্যমকে এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাটি সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। রেডিও পাকিস্তানের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, শরিফ মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় সমস্ত মন্ত্রকের সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা ভাগ করে নিয়েছিলেন, এই পরিকল্পনা অনুযায়ীই কাজ হবে।
- ‘আমাদের খরচ কমাতে হবে’
শেহবাজ শরিফ এদিন বলেছেন, ‘আমাদের খরচ কমিয়ে দেশকে স্বনির্ভরতার দিকে নিয়ে যেতে হবে।’ শরিফ কৃষি ও তথ্য প্রযুক্তির মতো বিভিন্ন খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোরও প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদে দেশের রপ্তানি দ্বিগুণ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করেছেন।
- ২০২৩ সালে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে যে পাকিস্তান ২০২৩ সালে তার ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব ক্রমাগত বাড়ছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্য, খাদ্য ও নিরাপত্তার ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
শুক্রবার প্রকাশ করা ৭৪০ পৃষ্ঠার ‘ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২৪’-এ, এইচআরডব্লিউ ১০০ টিরও বেশি দেশে মানবাধিকার অনুশীলন পর্যালোচনা করে দেখেছে যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেখতে গিয়ে কোনও ব্যাক আপ ছাড়াই সাধারণ মানুষের হাত থেকে ভর্তুকির সুবিধা নিয়ে নেওয়ার ফলে পাকিস্তানে নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট বেশি উষ্ণতা বৃদ্ধির হারের সম্মুখীন হয়েছে, যা চরম জলবায়ু সংক্রান্ত ঘটনাগুলিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।