ঋণ নেওয়ার সীমায় স্বস্তি নেই কেরলের, সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলা পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট

কেরলের অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বিবাদে কেরল সরকারকে অন্তর্বর্তী স্বস্তি দিতে অস্বীকার করল সুপ্রিম কোর্ট।

কেরল সরকার সংবিধানের ১৩১ অনুচ্ছেদের অধীনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল, ঋণ নেওয়ার সীমা সম্পর্কিত নিয়মকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। সেখানে রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা ও আনুসাঙ্গিক চাহিদার কথা তুলে ধরা হয়েছিল।

বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ জানিয়েছে, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে ১৩ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সাহায্যের জন্য দিতে রাজি হয়েছে। আদালত কেন্দ্রীয় সরকারের এই যুক্তি মেনে নিয়েছে যে কোনও রাজ্য যদি কোনও আর্থিক বছরে তার ঋণ নেওয়ার ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার করে, তবে পরবর্তী বছরগুলিতে অনুরূপ হ্রাস হতে পারে।

সংবিধানের ১৩১ ও ২৯৩ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত বৃহত্তর প্রশ্নগুলির সমাধানের জন্য বেঞ্চ মামলাটি পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়েছে। ১৩১ নং অনুচ্ছেদের অধীনে, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে উদ্ভূত আইনি বিষয়গুলির উপর সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার রয়েছে, অন্যদিকে ২৯৩ নং অনুচ্ছেদে বহিরাগত ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা এবং কেন্দ্র কতটা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তা বলা হয়েছে।

রাজস্ব নীতি সম্পর্কিত আইনি রিভিউয়ের সুযোগটি বৃহত্তর বেঞ্চ দ্বারা পরীক্ষা করা হবে। যেহেতু ২৯৩ অনুচ্ছেদের আগে সেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি, তাই বেঞ্চ বিষয়টি আরও বিবেচনার জন্য পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানো উপযুক্ত বলে মনে করেছে। পরপর দু’দিন ধরে চলা দীর্ঘ শুনানির পর ২২ মার্চ রায়দান সংরক্ষিত রেখেছিল শীর্ষ আদালতের একটি বেঞ্চ।

কেরল এবং কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ই আদালতকে ৩১ শে মার্চ চলতি আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে এই মামলায় একটি অন্তর্বর্তী আদেশ জারি করার জন্য অনুরোধ করেছিল, কারণ কয়েক দফা আলোচনা কোনও সহমতিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছিল তারা।

কেরল প্রথমে কেন্দ্রের কাছে ১৯,৩৫১ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অনুমোদন চেয়েছিল। কেন্দ্র অতিরিক্ত ১৩,৬০৮ কোটি টাকা ঋণ নিতে রাজি হলেও কেরলকে আইনি মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু আদালত হস্তক্ষেপ করে জানিয়ে দেয়, মামলা প্রত্যাহারের জন্য কেরলের উপর শর্ত আরোপ করতে পারে না কেন্দ্র।

পরবর্তীকালে কেরল বিভিন্ন শর্তের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রের এককালীন ব্যবস্থা হিসাবে ৫,০০০ কোটি টাকার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরিবর্তে, রাজ্য এককালীন ব্যবস্থা হিসাবে ন্যূনতম ১০,০০০ কোটি দাবি করেছিল, যুক্তি দিয়েছিল যে প্রস্তাবিত পরিমাণ জনসাধারণের তহবিল বিতরণ, পেনশন এবং বেতন সংশোধনের মতো প্রয়োজনীয় বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য অপর্যাপ্ত ছিল।