মেট্রোর জেরে যাত্রী সংখ্যা তলানিতে পৌঁছেছে, জলপথ পরিবহণে আয় কমল ২৫ শতাংশ

এখন ধর্মতলা থেকে মেট্রো করে অনায়াসে হাওড়া পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। ফলে জলপথে এখন আর হাওড়া যেতে চাইছেন না অনেকেই। ভাড়া কম হলেও সেখানে ভিড় হচ্ছে না। বরং হাওড়া যেতে মেট্রো পথে ভিড় বাড়ছে। সুতরাং তীব্র অর্থসঙ্কট দেখা দিয়েছে। আবার হাওড়া ময়দান থেকে মেট্রো চালু হওয়ার পরে যাত্রীর অভাব দেখা দিয়েছে। তার ফলে প্রায় ২৫ শতাংশ আয় কমেছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায়ের। এটা যদি চলতে থাকে তাহলে আয়ের বহর আরও কমবে। তাই রাজ্য সরকারের কাছে এই জলপথ পরিবহণ সংস্থার ৩০০ জন কর্মী এবং তাঁদের পরিবারকে বাঁচাতে আরও সার্ভিস রুট বাড়ানো এমনকী লঞ্চ বাড়ানোর আবেদন করে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

এখন লোকসভা নির্বাচন দু’‌মাস ধরে চলবে। রাস্তায় এখনই বেসরকারি বাস উধাও হয়ে গিয়েছে। তাই জলপথে ভিড় বাড়ার কথা। কিন্তু সেটা দেখা যাচ্ছে না। বরং ভিড় বাড়ছে মেট্রো রুটে। তাও এই বিশেষ রুটে। এখন গঙ্গায় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায়ের নিজস্ব লঞ্চ চলছে পাঁচটি। সংস্থার ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। এই সমবায় দফতরের পক্ষ থেকে ১২ জনের মনোনীত পরিচালকমণ্ডলী গঠিত হয়। এই পরিচালকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধি রাইচরণ মান্না বা বাপি মান্না। এই বিষয়ে বাপি মান্না বলেন, ‘মেট্রো চালু হতেই দেখা যাচ্ছে, আমাদের দৈনিক যাত্রী সংখ্যা কমছে। আয় ২৫ শতাংশ কমেছে। এখন ট্রেন থেকে নেমেই তো যাত্রীরা হাওড়া থেকে মেট্রোয় উঠে পড়ছেন।’

আরও পড়ুন:‌ আইএসএফের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে সিপিএম, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার কথা শুরু

এদিকে এখন যদি রুট না বাড়ে জলপথে তাহলে জলযান চালিয়ে আয় কঠিন হয়ে পড়বে। এমনকী এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সুতরাং এই কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের পরিবারে চরম দুর্দিন নেমে আসবে। জ্বালানী তেলের দাম বাড়ছে। কিন্তু পরিষেবার দাম একই থাকছে। তার উপর যদি যাত্রী সংখ্যা কমে যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। সূত্রের খবর, ডিজেলের দাম যখন লিটারপ্রতি ৪৮ টাকা ছিল, তখন জলপথে টিকিটের দাম ছিল ৬ টাকা। এখন ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৯০ টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। তখনও টিকিটের দাম বাড়ল না। তাহলে চলবে কী করে?‌ প্রশ্ন উঠছে সমবায়ের ভিতরেই।

অন্যদিকে এখন যা পরিস্থিতি তাতে দ্রুত কিছু করতে হবে। কারণ মেট্রোর জন্য চিন্তা চরমে উঠেছে। এখন এই সমবায় সংস্থাকে বাঁচানো রীতিমতো চ্যালেঞ্জের। এই বিষয়ে সমবায়ের চেয়ারম্যান বাপি মান্না বলেন, ‘রাজ্য সরকারের কাছে আরও লঞ্চ চেয়ে চিঠি দিচ্ছি। বাউড়িয়ার ভেঙে যাওয়া জেটি মেরামত করতে ২৯ লক্ষ টাকা রাজ্যের থেকে জোগাড় করা হয়েছে। সার্ভিস রুট আরও বাড়িয়ে, লঞ্চ ভাড়া দিয়ে আয় বাড়ানোর উপর জোর দিতে আবেদন করা হচ্ছে।’