High Court: স্ত্রীকে ‘ভূত’ বলে ডাকা নিষ্ঠুরতা নয়, পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের

সংসারে কত কিছুই না হয়। কিন্তু সব কথা কি আর ধরতে হয়। এই যেমন স্বামী যদি স্ত্রীকে ভূত বলে রাগ করে ডাকেন তবে সেটা কি নিষ্ঠুরতা? এনিয়ে এবার হাইকোর্ট তাদের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করেছে। 

আসলে ঝাড়খণ্ডের বোকারোর বাসিন্দা নরেশকুমার গুপ্ত ও তাঁর বাবা সহদেও গুপ্তর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের নালিশ করেছিলেন নরেশের স্ত্রী। ওই মহিলার বাড়ি বিহারে নওদাতে। সেখানেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন। এমনকী পণে গাড়ি চেয়েছিলেন বলেও তিনি নালিশ করেছিলেন। 

এদিকে ২০০৮ সালে নিম্ন আদালতে নরেশ ও তার বাবার সশ্রম কারাদণ্ড হয়। মুখ্য় বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত ১০ বছর পরে সেই আদেশই বহাল রাখে। এদিকে তার মধ্য়ে আবার ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট বিচ্ছেদের আর্জি মঞ্জুর করে।

এদিকে ওই মহিলার আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, এটা একবিংশ শতাব্দী। আর সেই সময় এক মহিলাকে ভূত-পিশাচ বলছেন শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। এটা ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতা। তবে আইনজীবীর এই বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি বিবেক চৌধুরী জানিয়ে দেন, ব্যর্থ বৈবাহিক সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলার নজির আছে। এমন সব অভিযোগ নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে না। সেই সঙ্গেই নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করেছে পাটনা হাইকোর্ট। 

এদিকে এর আগে একটি ডিভোর্সের মামলায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মতামত দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। দিল্লি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ একজন স্বামীর প্রত্যাশা থাকে যে তাঁর স্ত্রী ঘরের কাজ করবেন। কিন্তু সবসময় নিষ্ঠুর ব্যবহার করবেন না।

ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সুরেশ কুমার কৈত ও বিচারপতি নীনা বনশল কৃষ্ণার কাছে আবেদন করা হয়েছিল যে তিনি ডিভোর্স চাইছেন। কারণ তাঁর স্ত্রী অত্যন্ত নিষ্ঠুর। পারিবারিক আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন তিনি।

বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি কোনও বিবাহিতা মহিলাকে ঘরের কাজ করতে বলা হয় সেটা তাঁকে পরিচারিকা হিসাবে কাজ করতে বলা হচ্ছে তেমনটা নয়, এটা সেই পরিবারের প্রতি তাঁর ভালোবাসা হিসাবে গণ্য করা হয়।

হাইকোর্ট ওই ব্যক্তির ডিভোর্সের আবেদন মঞ্জুর করেছে। স্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ তুলে এই আবেদন করা হয়েছিল।

হাইকোর্ট জানিয়েছিল, ওই মহিলা স্বামীকে দূরে রেখে দিচ্ছেন। এভাবেই তিনি সন্তানের থেকে দূরে রাখছেন তার বাবাকে। বাবা হিসাবে তাঁর যে ইচ্ছা থাকতে পারে সেটা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি। এসব নিষ্ঠুরতার জেরে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন মেনে নিল হাইকোর্ট।