আরও একটি ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’-র দোরগোড়ায় আমরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর সিদ্ধান্ত নেয়, প্রত্যেক বছর ২ এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালিত হবে। কিন্তু আজও, এই ডিসএবিলিটি সম্পর্কে কি যথেষ্ট স্পষ্ট ধারণা রয়েছে আমাদের? (ছবি:PIXABAY)
২০২১ সালের ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ পেডিয়াট্রিকস’-এ যে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল, তা অনুযায়ী ভারতে প্রতি ৬৮ জন শিশুর ১ জনের অটিজম থাকার সম্ভাবনা থাকছে। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এই ডিএসবিলিটির আশঙ্কা বেশি। এখন প্রশ্ন হল, ‘অটিজম’ মানেই কি জীবনে এগোনোর কোনও আশা নেই? ধারণাটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল, মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। (ছবি:PIXABAY)
এক্ষেত্রে আরও একবার মনে করা দরকার, অটিজম মানে কী। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট বলছে, ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার’ বা ASD এমন এক ধরনের জটিল ‘কন্ডিশন’ যাতে আক্রান্তের সামাজিক মেলামেশার ক্ষমতা, ভাবের আদানপ্রদানে নানা ধরনের খামতি বা দুর্বলতা দেখা যায়। সঙ্গে কোনও একই ধরনের আচরণ বার বার করে যাওয়ার প্রবণতাও থাকতে পারে। সাধারণভাবে, বহু ক্ষেত্রে ১ বছর বয়সের মধ্যেই এর লক্ষণ দেখা যায়। তবে ২-৩ বছর বয়সের মধ্যে লক্ষণগুলি স্পষ্টতর হয়ে ওঠে, মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।চোখে চোখ এড়িয়ে যাওয়া ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার’ আক্রান্তদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, জানান মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। (ছবি:PTI)
মনোবিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, প্রত্যেক ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার’ আক্রান্তের সমস্যা স্বতন্ত্র। তাই সকলকে একই ছাঁচে ফেলে ভাবলে চলবে না। প্রত্য়েককে তাঁদের মতো করে বুঝে এগোতে হবে, তা হলে সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব। এমনকি নিজের পায়ে এগোনোও খুব অকল্পনীয় কিছু নয়। (ছবি:PIXABAY)
প্রদীপ সেন্টার ফর অটিজম ম্যানেজমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন এমন এক তরুণীর কথা জানালেন, যিনি কলকাতার এক ক্যাফেতে একেবারে নিজের চেষ্টায় চাকরি জোগাড় করেছেন। গুছিয়ে চাকরি করছেনও। (ছবি:PIXABAY)
রয়েছেন সেই তরুণও যিনি ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার’-এর সঙ্গে লড়াই করে, যাবতীয় বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে BBA শেষ করেছেন। অর্থাৎ এই ডিএসবিলিটি মানেই জীবন অন্ধকার, এমন একেবারেই নয়। (ছবি:PIXABAY)
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, কে কোন পেশা বেছে নিচ্ছেন, তার উপর সাফল্য-ব্যর্থতার অনেকটাই নির্ভর করে। অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা যেহেতু কমিউনিকেশন এবং সোশ্যালাইজেশনের, তাই এমন কোনও পেশা যেখানে বেশি কথাবার্তার প্রয়োজন নেই, তাতে গেলে সাফল্যের সম্ভাবনা থাকে।
তবে যত দ্রুত সমস্যা নির্ণয় ও প্রয়োজনমতো থেরাপি/ওষুধ চালু করা যায়, তত সুবিধা, একথাও জানাচ্ছেন তাঁরা। আক্রান্তের পাশাপাশি তাদের ‘কেয়ারগিভার’-দেরও বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করে তোলা দরকার। সবথেকে বড় কথা, এটি মনে রাখা জরুরি যে এই ডিএসবিলিটি মানেই অন্ধকার নয়। শুধু হাল না ছেড়ে সময়মতো পদক্ষেপ করা দরকার। (ছবি:PIXABAY)
Published at : 01 Apr 2024 08:58 PM (IST)
আরও জানুন স্বাস্থ্য
আরও দেখুন