স্ত্রী পরকীয়া করলে ডিভোর্সের ক্ষেত্রে স্বামীকে ভরণপোষণ দিতে হবে না-হাইকোর্ট

কোন ক্ষেত্রে প্রাক্তন স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়া বন্ধ করা যেতে পারে সে প্রসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘ভরণপোষণের আবেদন দাখিলের সময় যদি প্রাক্তন স্ত্রী ব্যভিচার করেন বা পর পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে স্বামী ভরণপোষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ‘স্ত্রী শিক্ষিত হলেই তাঁকে কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না’ বলল দিল্লি হাইকোর্ট

উল্লেখ্য, কোয়েম্বাটুরের একটি ফ্যামিলি কোর্ট বিবাহবিচ্ছেদের পর এক ব্যক্তিকে মাসে ১০,০০০ টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। হাইকোর্টের ইন্দোর বেঞ্চের বিচারপতি প্রকাশ চন্দ্র গুপ্তা ব্যক্তির দায়ের করা পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করার সময় এই পর্যবেক্ষণ করেছেন। জানা গিয়েছে, এই দম্পতি ২০১৫ সালে মার্চে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, সেই সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। এরপর কোয়েম্বাটোরের একটি আদালত ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে।

এই মামলায় বিচারপতি গুপ্তা বলেন, ‘কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (সিআরপিসি) অনুযায়ী, এখানে ‘স্ত্রী’ শব্দটি বলতে এমন একজন মহিলাকে বোঝানো হয়েছে যার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে এবং পুনরায় বিয়ে করেননি। আইন অনুযায়ী, আবেদনের সময় ব্যভিচার অব্যাহত থাকতে হবে এবং স্ত্রীকে ভরণপোষণের ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার জন্য সেটি প্রমাণ সেটি স্বামীকেই প্রমাণ করতে হবে।’

আদালত আরও বলেছে, আবেদনের সময় যদি স্ত্রী পর পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত বা ব্যভিচার করে থাকেন তখন তাকে ভরণপোষণের ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া যেতে পারে। উল্লেখ্য, স্বামীর একটি রিভিশন পিটিশন করে অভিযোগ করেছিলেন, যে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি রাতে ফোনে অন্য পুরুষের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। স্বামী দাবি করেছিলেন, যে তার স্ত্রী ভোপালের বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে থাকছিলেন। তার কিছু ছবিও তুলেছিলেন মহিলার স্বামী। কিন্তু, তা প্রমাণ করার জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট অবশেষে ওই ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালত জানিয়েছে, স্ত্রী যে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন সেই প্রমাণ করতে স্বামী ব্যর্থ হয়েছেন। তাই ফ্যামিলি কোর্টের রায় বহাল রাখে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট।