Girl First Period: ১৪ বছরে এসে প্রথম মাসিক! কষ্ট সামলাতে না পেরে আত্মহত্যা করল মুম্বইয়ের কিশোরী

আজকের আধুনিক সমাজ মেনোপজ নিয়ে কথা বলে। মাসিক মহিলাদের জন্য খুবই সাধারণ। প্রত্যেককে সেই পর্বটি অনুভব করতে হবে। এমনটাই বলা হয়। কিন্তু আদতে সেইভাবে কি এর সচেতনতা প্রচার করা হচ্ছে! এখন এমনও অনেক বাবা মায়েরা রয়েছেন যাঁরা মেয়ে সন্তান কিংবা ছেলে সন্তান দুজনের সঙ্গেই খোলামেলা কথা বলতে দ্বিধা বোধ করেন। এই দ্বিধা কখনও যে একটা নিষ্পাপ প্রাণও কেড়ে নিতে পারে। তা জানা ছিল না। এমনই একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে মুম্বইয়ের মতো মেট্রো শহরে।

গত বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে ১৪ বছরের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। মেয়েটির প্রথমবারের মতো মাসিক হয়েছিল এবং সে এর আগে এই বিষয়ে কিছুই জানত না। স্পষ্টতই, শরীর থেকে হঠাৎ রক্তপাত তার জন্য একটি ধাক্কাই ছিল। এই ধাক্কা এতটাই বড় ছিল যে সে নিজের প্রাণটাই কেড়ে নিয়েছে। কে জানে ওই মোক্ষম সময়ে তার মনে এমন কি চলেছে, তার মনে কি ধরনের ভয়ঙ্কর চিন্তা এসেছে, যে সে এত বড় পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেছে। যদি কোনও নিষ্পাপ মেয়ে তার মাসিকের কারণে আত্মহত্যা করে, তার কারণ কি শুধু তার পিরিয়ড নাকি অন্য কিছুও রয়েছে এর মধ্যে!

আসল কারণ হল অজ্ঞতা। মাসিক নিয়ে সমগ্র সমাজে প্রচলিত লজ্জা ও নিষিদ্ধকরণ। বাড়িতে, স্কুলে সর্বত্রই এই বিষয়ে নীরবতা বিরাজ করছে। ১৪ বছরের মেয়েটিও পিরিয়ড সম্পর্কে কিছুই জানত না। তার মা, শিক্ষক বা আশেপাশের কেউ কখনও মেয়েটিকে এর জন্য প্রস্তুত করার প্রয়োজন অনুভব করেননি। যার দরুণ এত বড় ক্ষতিটা হয়ে গিয়েছে। এ কারণে এই ধরনের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক ও কাউন্সেলররা।

  • ওই মেয়েটির সঙ্গে আসলে কী ঘটেছিল

মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ের মালওয়ানি এলাকায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে অনেকটাই দেরিতে। স্থানীয় লক্ষ্মী ঝুপড়িতে বসবাসকারী ১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ের প্রথমবারের মতো মাসিক শুরু হয়েছিল। তার পিরিয়ড সম্পর্কে কোনও জ্ঞানই ছিল না। তাই সেই সময় প্রচণ্ড যন্ত্রণা সইতে পারছিল না সে। প্রচণ্ড মানসিক চাপে অনুভব করছিল। এ কারণে চলতি মাসের ২৬ তারিখ রাতে বাড়িতে কেউ না থাকায় সে আত্মহত্যা করে। বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যরা যখন দেখতে পান যে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাকে কান্দিভালির স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তাররা তৎক্ষণাৎ পরীক্ষা করে নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন যে মেয়েটি ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে।

পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল পুলিশ। সন্দেহজনক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তও শুরু করেছে। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি মেয়েটির প্রথম মাসিক হয়েছিল। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছেন, এর ফলে সৃষ্ট যন্ত্রণা সইতে না পারায় সে আত্মহত্যা করেছে, এমনটাও হতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির মানসিক অবস্থা সম্পর্কে আরও জানতে তাঁরা মেয়েটির বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। মেয়েটির মুঠোফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখে মেয়েটির আত্মহত্যার অন্য কোনও কারণ আছে কিনা তা খুঁজে বের করা হবে। তবে, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পিরিয়ড সম্পর্কে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সঠিক বোঝাপড়ার অভাবই এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার আসল কারণ।