Narayana Murthy: টানা পাঁচ দিন কেন না খেয়ে ছিলেন ইনফোসিসের নারায়ণ মূর্তি?

পেটের জ্বালা বড় জ্বালা। আর সেই জ্বালাই ভোগ করতে হয়েছিল ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তিকে। সম্প্রতি, রাষ্ট্রপুঞ্জে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন যে ৫০ বছর আগে যখন ইউরোপে গিয়েছিলেন, তখন তাঁকে টানা ১২০ ঘন্টা অর্থাৎ ৫ দিন না খেয়ে থাকতে হয়েছিল। এ সময় তিনি খিদের জ্বালায় কষ্ট পেতেন। কিন্তু খাওয়ার কিছুই ছিল না। ভারত সহ বিশ্বজুড়ে প্রচুর সম্পদের মালিক এবং ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তির জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত এই আশ্চর্যজনক ঘটনার কথা কমবেশি খুব কম ব্যক্তিই হয়ত জানতেন।

সম্প্রতি, মঙ্গলবার ৭৭ বছর বয়সী নারায়ণ মূর্তি রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে ভারতের স্থায়ী মিশন দ্বারা আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছিলেন, ওই অনুষ্ঠানের থিম ছিল ‘খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন: শক্তিশালী উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা।’ ভারতীয় এনজিও ‘অক্ষয় পাত্র ফাউন্ডেশন’ দ্বারা আয়োজিত চার বিলিয়ন খাবার পরিবেশন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যাতে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির ক্ষেত্রে ভারতের উদ্ভাবনী কৌশল, নীতি এবং অর্জন বিশ্বজুড়ে প্রকাশ পায়।

  • কিন্তু ইউরোপে ভ্রমণের সময় কেন এমন বিধ্বস্ত অবস্থা হয়েছিল নারায়ণ মূর্তির

রাষ্ট্রপুঞ্জের কূটনীতিক, কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সামাজিক সংগঠন এবং ভারতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের উদ্দেশ্যে এদিন নারায়ণ মূর্তি বলেছিলেন, আপনারা অনেকেই হয়তো খিদের জ্বালা কি, সেই বিষয়টা খুব একটা অনুভব করেননি। কিন্তু আমি করেছি ভীষণভাবে। নারায়ণ মূর্তি এ প্রসঙ্গে আরও বলেছিলেন যে ৫০ বছর আগে, যখন আমি ইউরোপ জুড়ে এবং বুলগেরিয়া এবং তারপরে যুগোস্লাভিয়া এবং আজকের সার্বিয়ার মধ্যবর্তী একটি সীমান্ত শহর নিস নামক একটি জায়গায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, তখন আমি সরাসরি ১২০ ঘন্টা ক্ষুধার্ত ছিলাম।

মূর্তির কথায়, এই অঞ্চলের ভারতীয়রা এবং আমি, ভারত সরকারের সহায়তা পেয়েছি। তাই সভ্য মানুষ হিসেবে আমাদের জাতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। আমাদের উচিত দরিদ্র শিশুদের সুশিক্ষা প্রদানে সহায়তা করা। সাফল্য অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। অক্ষয় পাত্র এই অর্থে খুবই সফল। যদি আমাদের দরিদ্র শিশুরা আমাদের সমাজে আশা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, তাহলে তারা সহিংসতার দিকে মোড় নেবে।

  • ‘ অন্যান্য দেশের উচিত ভারতের এই মডেল অনুকরণ করা’

নারায়ণ মূর্তি রাষ্ট্রপুঞ্জে অন্যান্য দেশের নেতাদের কাছে ‘অক্ষয় পাত্র মডেল’ অনুকরণ করে তাঁদের দেশের দরিদ্র শিশুদের সুখ, স্বাস্থ্য, আত্মবিশ্বাস, আশা এবং সাফল্য নিয়ে আসার জন্য আবেদন করেছিলেন। ফাউন্ডেশনের কাজের প্রশংসা করে, নারায়ণ মূর্তি আরও বলেছিলেন যে অক্ষয় পত্র আমাদের বিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে যে ভারতে সত্যিই ভাল কিছু ঘটতে পারে।

  • বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর

এছাড়াও সরকারের অর্থনৈতিক নীতির সাফল্যের কারণে ভারত ভালো অর্থনৈতিক অগ্রগতি করছে বলে জোর দিয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন যে ভারত সরকার বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা পরিচালনা করেন। নারায়ণ মূর্তি বলেছেন যে অক্ষয় পাত্র ভারত সরকারের এই চমৎকার উদ্যোগের একজন গর্বিত সদস্য এবং গর্বিত অংশীদার। দারিদ্র্যতা শুধু ভারতে জন্য, এটি প্রতিটি সমাজেই বিদ্যমান। নারায়ণ মূর্তি বলেছিলেন যে অক্ষয় পত্র দেশের উন্নয়নের এবং সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টায় দরিদ্র মানুষকে একটা সুন্দর জীবন দানের লক্ষ্যে ভারতের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করছে।